সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
দেশে প্রতি ১০০ জনে প্রায় ৩৫ জন তামাকজাত দ্রব্যে আসক্ত। ২০১৭ সালের গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভের রিপোর্টে এমন ভয়ানক চিত্র উঠে আসে। এ অবস্থায় তামাক কোম্পানির কূটকৌশল প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবসের একদিন আগে (৩০ মে) রাজধানীর ধানমন্ডিতে গণস্বাস্থ্যের প্রতীকী শোভাযাত্রা ও আলোচনায় এ আহ্বান জানানো হয়। গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যান্সার হাসপাতাল প্রকল্প ও গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
সকাল ১১টায় ধানমণ্ডি ৬ নম্বর রোডে গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতালের সামনে সংক্ষিপ্ত আলোচনা ও প্রতীকী শোভাযাত্রাটি অনুষ্ঠিত হয়।
এতে বক্তারা জানান, ২০১৪ সালে পরিচালিত গ্লোবাল স্কুল-বেজড হেলথ সার্ভে (জিএসএইচএস) অনুযায়ী, বাংলাদেশে ১৩-১৫ বছর বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে তামাক ব্যবহারের হার ৯.২ শতাংশ।
ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকার মোট ১১০টি স্কুলের পারিপার্শ্বিক এলাকার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয় একটি জরিপ পরিচালনা করে। এতে দেখা যায়, স্কুলগুলোর ১০০ মিটার মধ্যে মোট ৫০৭টি মুদি দোকানের ৪৮৭টিতেই অন্যান্য দ্রব্যের সাথে তামাকদ্রব্য প্রদর্শিত হচ্ছে।
অথচ বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে তামাকদ্রব্যের এমন প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ অবস্থায় তামাক কোম্পানির অপতৎপরতা রুখে দেওয়ার ডাক দেন বিশেষজ্ঞরা।
গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক ক্যান্সার হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ও প্রিভেন্টিভ অনকোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন সভায় মূল বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, ফুসফুসের ক্যান্সারের শতকরা ৮৫-৯০ ভাগ এবং শরীরের সব ক্যান্সারের ৫০ ভাগের জন্য দায়ি তামাক।
ডা. হাবিবুল্লাহ রাসকিন বলেন, কেবল নিজে ধূমপান না করাই যথেষ্ট নয়। পরোক্ষ ধূমপান থেকেও নিজেকে এবং সমাজকে মুক্ত রাখা জরুরি।
বক্তারা বলেন, আমরা তামাকের উপর কর বৃদ্ধি ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের কার্যকর প্রয়োগ চাই। সাথে স্বাস্থ্য সচেতনতার উপর যথাযথ গুরুত্ব দেখতে চাই।
গণস্বাস্থ্যনগর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও কর্মীরা শোভাযাত্রায় অংশ নেন। অন্যান্যের মধ্যে এতে বক্তব্য রাখেন সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. আকরাম হোসেন, প্যাথলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. গোলাম মো: কোরাইশি, অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোঃ হাবিবুর রহমান এবং হৃদরোগ বিভাগের পরামর্শক ডা. নুরুল হাসান।
আগামিকাল ৩১ মে বিশ্ব তামাক মুক্ত দিবস। এ বছর এই দিবসের প্রতিপাদ্য ‘তামাক কোম্পানির কূটকৌশল প্রতিহত করি, শিশু সুরক্ষা নিশ্চিত করি’।