অধিকাংশ কিশোর-কিশোরী প্রজননস্বাস্থ্য সচেতনতার বাইরে

প্রজননস্বাস্থ্য, প্রজননস্বাস্থ্য সচেতনতা, আরএইচএসটিইপি, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য,

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

পুষ্টির বিষয়ে কিশোরীদের সঠিক জ্ঞান নেই। নিজেদের অধিকারগুলো সম্বন্ধেও সচেতন নন। ফলে খুব সহজেই অভিভাবকরা তাদের বিয়ে দিতে পারছেন আর এভাবেই অপুষ্ট শশুর জন্ম হচ্ছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারের আজিমুর রহমান মিলনায়তনে আয়োজিত ‘কমপ্রিহ্যানসিভ সেক্সুয়ালিটি এডুকেশন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় বিশেষজ্ঞরা জানান, দেশের ৩ কোটি ৬০ লাখ কিশোর-কিশোরীর অধিকাংশই এখনো প্রজননস্বাস্থ্য সচেতনতার বাইরে রয়েছে।

অনুষ্ঠানের আয়োজক রিপ্রোডাক্টটিভ হেলথ সার্ভিসেস ট্রেনিং অ্যান্ড এডুকেশন প্রোগ্রাম- আরএইচএসটিইপি’র ‘রাইট হেয়ার রাইট নাও-আরএইচআরএন কর্মসূচি।

অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. মনজুর হোসেন, সেশন পরিচালনা করেন প্রকল্পের ডিপুটি ডিরেক্টর ডা. এলভিনা মোস্তারি ও রাইট হেয়ার রাইট নাউ-২ প্রকল্পের উপর উপস্থাপনা করেন তাওসিন আহমেদ সোহেল।

অনুষ্ঠানে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. মনজুর হোসেন বলেন, দেশে কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক। অনেক স্কুলে মানসম্মত নারীবান্ধব টয়লেট নেই।

ফলে ঋতুকালীন সময়ে কিশোরীরা ৩ থেকে ৪ দিন স্কুলে অনুপস্থিত থাকছে। এছাড়া পরিবেশের তাপমাত্রার কারণে নারীদের ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যাচ্ছে বলেও জানান তারা।

ডা. মনজুর আরও বলেন, প্লাস্টিক দূষণের কারণে প্রজনন স্বাস্থ্য ক্ষমতা কমে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে অধিক বয়সে বিয়ে ও গর্ভধারণের ফলে ডাউন সিন্ড্রোম ও অটিস্টিক শিশুর জন্ম হচ্ছে।

অথচ কিছু বিষয়ে দেশের কিশোরীদের সচেতন করে তুলতে পারলে, তারা নিজেরা যেমন একটি সুস্থ্য জীবন যাপন করতে পারে; তেমনি দেশও পেতে পারে একটি সুস্থ নতুন প্রজন্ম।

অনুষ্ঠা‌নে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যের ১২ টি অধিকার এবং এর উপাদানগুলির উপরও আলোচনা করেন ডা. এলভিনা মুস্তারী।

এ সময় যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে সাংবাদিকদের সহযোগিতাও কামনা করেন তিনি।

ডা. এলভিনা মুস্তারী বলেন, ন্যাপকিনের কারণেও নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ক্ষমতা কমে যায়। ন্যাপকিনে এমন কিছু উপাদান আছে, যাতে নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য ক্ষমতা কমে যায়।

একটি ন্যাপকিন সহজে মাটির সঙ্গে মেশে না, অনেক বছর লাগে মিশতে। তবে বর্তমানে নতুন ধরণের ন্যাপকিন তৈরি হচ্ছে, যেগুলো পরিবেশবান্ধব ও নারীদের সহায়ক।

তিনি আরও জানা‌ন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৪৫ ভাগের বেশি জনগোষ্ঠী ১০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। যারা যুব সমাজের অন্তর্ভুক্ত।

কিন্তু দেশের যুব সমাজের বড় অংশই তাদের যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার সম্পর্কে একেবারেই অজ্ঞ।

ফলে নানান যৌন সংক্রান্ত সমস্যার পাশাপাশি তাদের প্রজনন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে বয়ঃসন্ধিকালেই।