লালমনিহাটে হত্যাকাণ্ডের শিকার জুয়েল ছিলেন ধর্মানুরাগী

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার দোহাই দিয়ে অতিউৎসাহী মানুষের পৈশাচিকতায় নিহত জুয়েল ছিলেন মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন অত্যন্ত ধর্মভীরু। এমনটাই জানিয়েছেন, জুয়েলের পরিবার, স্বজন, বন্ধু ও এলাকাবাসী। কোনআন অবমাননার জন্য তাকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় বিষ্মিত তারা।

২৯ অক্টোবর শুক্রবার বিকেলে লালমনিহাটের বুড়িমারীতে জুয়েলকে নৃশংশভাবে হত্যা করা হয়। ধর্ম রক্ষার নামে ধর্মভীরুরা কতটা পৈশাচিক হতে পারে, তা যেন কলঙ্ক হয়ে থাকলো লালমনিরহাটের বুড়িমারীসহ গোটা বাংলাদেশের। তাও এমন একজন এই হত্যাকাণ্ডের শিকার, যিনি নিজেই কোরআন পাঠ করতেন নিয়মিত।

জুয়েলের পুরো নাম আবু ইউসুফ মোহাম্মদ শহীদুন্নবী জুয়েল। বাড়ি রংপুরের শালবনে। তাঁর স্বজন ও বন্ধুরা জানান, ২০১৬ সালে ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুলের চাকরি হারিয়ে মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত ছিলেন জুয়েল। এরপর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ সেবন করতেন জুয়েল।

লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে শুক্রবার বিকেলে মোটর সাইকেলে আরেক বন্ধুকে নিয়ে মসজিদে যান জুয়েল। এ সময় কোরআন শরীরে পা লেগেছে, এমন অভিযোগ নিয়ে মুসল্লিদের সাথে তার বিবাদ বাধে। এরই রেশ ধরে হঠাৎ করেই যেন মানবিক বোধশুন্য হয়ে পড়ে গোটা এলাকা।

প্রথমে পিটিয়ে, এরপর গায়ে কোরোসিন ঢেলে পুড়িয়ে মারা হয় জুয়েলকে। এ নিয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে তাণ্ডব। অনেক চেষ্টায় স্থানীয় প্রশাসন জুয়েলের বন্ধু সুলতান জুবায়েদ আব্বাসকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বিক্ষুব্ধ জনতার আক্রোশে আহত হন পাটগ্রাম থানার ওসিসহ ১২ পুলিশ সদস্য।

এ ঘটনায় অতিরক্তি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট টিএমএ মোমিনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে তিন কর্মদিবসের মধ্যে।