দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে

স্ট্রোক সাইকোহেলথ নিউজ

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধির সাথে দীর্ঘক্ষণ কাজের গভীর সম্পর্ক থাকতে পারে বলে ফ্রান্সের এক গবেষণায় উঠে এসেছে। দীর্ঘ কর্মঘণ্টা বলতে বছরে অন্তত ৫০ দিন ১০ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কাজ করাকে বোঝানো হয়েছে। গবেষকরা বলছেন, এভাবে যারা কমপক্ষে এক দশক ধরে কাজ করে আসছেন, তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেক বেশি।

তবে যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, দীর্ঘ কর্মঘণ্টার নেতিবাচক প্রভাব মোকাবেলায় পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে ওই সময়ের মধ্যে ব্যায়াম বা ভালো খাওয়ার মতো অনেক কাজই করার আছে।

অ্যাঙ্গারস ইউনিভার্সিটি এবং ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিকেল রিসার্চের গবেষকরা যৌথভাবে এই গবেষণার বিশাল নমুনা সংগ্রহ, তথ্য বিশ্লেষণ ও প্রতিবেদন তৈরি করেন। এক লাখ ৪৩ হাজারেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেন তারা। ফ্যাক্টর ছিল বয়স, ধুমপান ও কর্মঘণ্টা।

গবেষণায় দেখা যায়, ৩৩ শতাংশেরও কম মানুষ দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় কাজ করেন। আর এভাবে ১০ শতাংশ ব্যক্তি কাজ করেন ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে। সবমিলিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে যাওয়া মানুষের মধ্যে ১২২৪ জন স্ট্রোকের শিকার।

আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের জার্নাল ‘স্ট্রোক’-এ এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, যারা দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় কাজ করেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৯ শতাংশ। আর এভাবে যারা ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি আরো বেশি, তথা শতকরা ৪৫ ভাগ।

যারা পার্টটাইম কাজ করে বা যারা দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় কাজ করার আগেই স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন, গবেষণা থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে। এই গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. অ্যালেক্সিস ডিসাথা। তিনি জানান, অনূর্ধ্ব ৫০ বছর বয়সীদের ১০ বছর ধরে দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় কাজ করার সাথে স্ট্রোকের সম্পর্ক অনেক বেশি বলেই মনে হচ্ছে। যেটা অপ্রত্যাশিত। তবে এই তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে আরো গবেষণার প্রয়োজন।

যদিও অন্যান্য গবেষণা বলছে, যারা নিজের ব্যবসা পরিচালনা করেন, সেই সব ব্যবসায়ী, সিইও এবং ব্যবস্থাপকরা দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় তেমন তিতে পড়েন না, যতটা না বেশি ঝুঁকিতে অনিয়মিত শিফট ও নাইট ডিউটিকারী অথবা চাকরিতে মানসিক চাপে থাকা ব্যক্তিরা।

স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের রিসার্চ হেড ড. রিচার্ড ফ্রান্সিসের মতে, অনেক সাধারণ কিছু কাজের মাধ্যমে আমরা স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে পারি, এমনকি দীর্ঘ কর্মঘণ্টায় কাজ করলেও। এর মধ্যে রয়েছে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, সময় নিয়ে ব্যায়াম করা, ধুমপান বন্ধ করা এবং পর্যাপ্ত ঘুম।