সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল একজন শিক্ষার্থীর জীবনের মোড় ঘোরায়। মাধ্যমিকের গন্ডি পেরোতে না পারলে শিক্ষার্থীদের একটা বড় অংশ ঝরে পড়ে। ছেলেদের লাগিয়ে দেয়া হয় কাজে আর মেয়েদের বিয়ে দেয়া বেশ পুরনো ঘটনা। এর বাইরে এই পরীক্ষার ফলাফলকে কেন্দ্র করে এমন অনেক কিছুই ঘটে, যা হওয়ার কথা ছিল না।
ছেলেদের পেছনে ফেলে এবারও পাশের হারে এগিয়ে মেয়েরা। প্রতিবছর এভাবে ছেলেদের পিছিয়ে থাকার কারণ খতিয়ে দেখতে তাই নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ বছর নাটোরের নলডাঙ্গায় ছেলের সঙ্গে এসএসসি পাস করেন মা ও খালা। মা নাসিমা বেগম বিপ্রবেলঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য। খালা হালিমা বেগমও একই ইউনিয়নের অন্য ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য।
একই জেলার বাগাতিপাড়ায় এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়া ৩ নারী জনপ্রতিনিধির ২ জন পাস করেছেন কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের আওতায়। তারা হলেন, পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শিলা খাতুন এবং সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য শাহানাজ পারভীন। তবে একই সঙ্গে পরীক্ষা দিলেও ফেল করেছেন বাড়াতিপাড়া পৌরসভার সংরক্ষিত নারী সদস্য মুর্শিদা বেগম।
দুই হাত না থাকলেও দমিয়ে রাখতে পারেনি জামালপুর সরিষাবাড়ীর অদম্য শিক্ষার্থী সিয়ামকে। প্রচন্ড ইচ্ছাশক্তির কাছে হার মেনেছে তার শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। পরিবারের অভাব ও দারিদ্র্যকে তিনি জয় করেছেন পা দিয়ে লিখে।
২০১৯ সড়ক দূর্ঘটনায় পা হারানো মিফতাহুল জান্নাত এক পায়ে ভয় করে দিয়েছিলেন এসএসসি পরীক্ষা। যশোরের শার্শা উপজেলার বুরুজবাগান পাইলট বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।
গত বছরের বিপর্যয় কাটিয়ে এবার এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে দেশসেরা হয়েছে যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। এ বছর যশোর বোর্ড থেকে ২০ হাজার ৭৬১ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়েছেন। পাসের হার ৯২ দশমিক ৩৩, যা দেশের আট শিক্ষা বোর্ডের মধ্যে সেরা। গতবছর এই শিক্ষা বোর্ডে ফল বিপর্যয় ঘটে। পাসের হার নেমে দাঁড়ায় ৮৬ দশমিক ১৭।
এসএসসির ফলাফলে এতো এতো পাশের ভীড়েও ৫১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পাস করতে পারেননি একজনও। গত বছর এমন প্রতিষ্ঠান ছিল ৪৮টি।
খুশির এই দিনে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন বেশ কয়কজন শিক্ষার্থী। ঝিনাইদহ, হবিগঞ্জ, রংপুর, ঠাকুরগাঁও ও চট্টগ্রামে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।