করোনা থেকে বাঁচার উপায়

ফাইল ছবি

হেলথ ডেস্ক

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ২০২৩ এর ডিসেম্বরে কোভিড-১৯ এ প্রায় ১০ হাজার লোক মারা গেছে। তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, কোভিড-১৯ এখনও বড় ধরনের হুমকি হিসেবে বিবেচিত।


সংস্থাটি বলেছে, বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে গতমাসে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। বিশেষ করে ক্রিসমাসের সময়ে বড়ো জমায়েতের কারণে বিশ্বব্যাপী করোনার জেন-১ সংক্রমণ বেড়ে গেছে। এই ভ্যারিয়েন্ট থেকে রক্ষা পেতে আমাদের নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে অভ্যস্ত হতে হবে।


কখন হাত ধোবেন


হাঁচি, কাশি ও নাক ঝাড়ার পর
খাবার খাওয়া বা খাবার প্রস্তুত করার আগে
দরজার হ্যান্ডেল ও ফ্যান, লাইটের সুইচের মতো আরও বহু ব্যক্তির স্পর্শ স্থান ধরার পর
রান্নাঘর ও বাথরুমের মতো শেয়ার করা জায়গাগুলোর সংস্পর্শে আসার পর
বাইরে থেকে ঘরে ফেরার পর


কোথায় স্পর্শ করবেন না


নিজের চোখ, নাক ও মুখ স্পর্শ করা এড়িয়ে চলুন। মুখ স্পর্শ করার প্রয়োজন হলে (যেমন, আপনার মুখের আবরণী পরা বা খুলে রাখা) আগে ও পরে আপনার হাত ধুয়ে ফেলুন বা স্যানিটাইজ করুন।

আপনি কাশি বা হাঁচি দেয়ার নিয়ম


হাঁচি, কাশি দেয়ার সময় ডিসপোজেবল টিস্যু দিয়ে নিজের মুখ ও নাক ঢেকে রাখুন। টিস্যু না থাকলে নিজের কনুইয়ের ভাঁজে হাঁচি দিন এবং পরে তা সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

ব্যবহৃত টিস্যু আবর্জনার ব্যাগে ফেলুন এবং অবিলম্বে হাত ধুয়ে ফেলুন।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখবেন যেভাবে

অন্যদের কাছ থেকে নিজেকে কমপক্ষে এক মিটার বা তিন ফুট দূরত্ব বজায় রাখুন। সচেতনভাবে ভিড় এড়িয়ে চলুন। কারণ ভিড়ের মধ্যে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংস্পর্শে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি এবং অন্যদের থেকে এক মিটার দূরত্ব বজায় রাখাও সম্ভব হয় না।

নিয়ম মেনে মাস্ক পরুন

করোনাভাইরাস থেকে প্রাথমিকভাবে সার্বক্ষণিক সুরক্ষা দেয় মাস্ক। তাই সচেতনতার সাথে নিয়ম মেনে এর ব্যবহার জরুরি।

এর জন্য যা যা করতে হবে-

মাস্ক নাকের নিচে নামাবেন না
থুতনি উন্মুক্ত রাখবেন না
মাস্ক টেনে থুতনির নিচে নামাবেন না
মাস্ক পরার সময় এর কাপড় স্পর্শ করবেন না
ঢিলাঢালা মাস্ক পরবেন না
ময়লা, নষ্ট বা ভেজা মাস্ক পরবেন না

টিকা নিন


ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে সম্মুখসারির স্বাস্থ্যকর্মী, ৬০ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী, দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত ১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠী।

তবে স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাপ্ত বয়স্ক (১৮ বছর এবং তদূর্ধ্ব) জনগোষ্ঠী ও গর্ভবতী নারীদের প্রাধান্য দেওয়া হবে।

অনলাইনে নিবন্ধন করে টিকা কার্ড সংগ্রহ করুন।

বৃহস্পতিবার ১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ এ নতুন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন ব্যবস্থাপনা টাস্কফোর্স বিভাগের সদস্য সচিব ডা. মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত একটি বিজ্ঞপ্তিতে একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এতে আরও বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ফাইজার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কার্যক্রমের ১ম, ২য় এবং বুস্টার ডোজ (৩য়, ৪র্থ ডোজ) বিতরণ এবং প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

শিগগিরিই কোভিড-১৯ টিকাদান কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা শহরের ৮টি কেন্দ্রে বুস্টার ডোজ অর্থাৎ ৩য় এবং ৪র্থ ডোজ ফাইজার ভিসিভি ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

১ম এবং ২য় ডোজ টিকা পাবার প্রমাণস্বরূপ ভ্যাকসিনের নাম এবং তারিখ উল্লেখপূর্বক কোভিড-১৯ টিকাদান কার্ড সংল্লিষ্ট কেন্দ্রে প্রদান করা হবে।

৩য় এবং ৪র্থ ডোজ টিকার ক্ষেত্রে সুরক্ষা ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপ থেকে টিকাকার্ড ডাউনলোড করে সাথে আনতে হবে।

এমআইএস অর্থাৎ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পূর্ব নির্ধারিত উপায়ে কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিনেশনের রিপোর্ট প্রদান করতে হবে। নিবন্ধনের সময় নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি কার্ড) এবং মোবাইল সাথে রাখুন।

কোভিড-১৯ এর লক্ষণ দেখলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন


করোনার বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্টের সাধারণ উপসর্গ মাথাব্যথা, গলাব্যথা আর নাক দিয়ে সর্দি পড়া।

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ এনএইচএসের মতে, সাধারণত কোভিডের যেসব উপসর্গ দেখা যায়, তা হলো- কাশি, জ্বর ও স্বাদ-গন্ধ না পাওয়া।

অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে শরীর ঠাণ্ডা হয়ে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা, মাথাব্যথা, রাতে ঘুম না আসা এবং পেশি ব্যাথা।

বেশিরভাগ সুস্থ-সবল মানুষ করোনায় আক্রান্ত হলে হালকা অসুস্থতা বোধ করেন। তা হালকা হলেও বাসায় অবস্থান করুন। করোনা টেস্ট করুন এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।