সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
গত বছরের সাধারণ ছুটি ঘোষণার পরপরই দেশে করোনা ছড়ায়। সংক্রমণ ঠেকাতে গত বছরের ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। এক গবেষণায় বলা হয়েছে, সে সময় হুড়োহুড়ি করে একসাথে বিপুল সংখ্যক মানুষের ঢাকা ছেড়ে যাওয়াই দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের বিস্তারের প্রাথমিক কারণ। দেশি-বিদেশি সাত প্রতিষ্ঠানের এই গবেষণার বিষয়ে মঙ্গলবার প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি)।
এতে বলা হয়, সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআরবি, আইদেশি, বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোগ্রাম, যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্যাঙ্গার জিনোমিক ইনস্টিটিউট, যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ এবং যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বাথের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণায় যুক্ত ছিলেন।
তাদের যৌথ উদ্যোগে ২০২০ সালের মার্চ মাসে এই গবেষণাটি শুরু হয়। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রবেশ, বিস্তৃতি এবং বিস্তার প্রতিরোধে বিভিন্ন সময়ে বিধিনিষেধ এবং জনসাধারণের গতিবিধির ভূমিকার ওপর ভিত্তি করে এই বিশ্লেষণধর্মী গবেষণাটি করা হয়েছে।
গবেষণাটি গত ৪ সেপ্টেম্বর নেচার সাময়িকীতে প্রকাশিত হয়। এতে প্রাথমিকভাবে গত বছরের মার্চ থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত ৩৯১টি করোনাভাইরাসের জিনোম বিশ্লেষণ করা হয়। বিশ্লেষণে দেখা যায়, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসের উদ্ভব হয় গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে।
পরে অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক বিমান চলাচলের মাধ্যমে আরও ভাইরাসের অনুপ্রবেশ ঘটে। গবেষণায় ফেসবুক ডেটা ফর গুড, গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি আজিয়াটা লিমিটেড জনসংখ্যা মোবিলিটি তথ্য সরবরাহ করেছে। সার্স-কোভ-২ নমুনার সিকোয়েন্সিংয়ে সহায়তা করেছে বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ।
আইসিডিডিআরবি জানায়, বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। বিস্তার প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার মার্চ মাসের ২৩ তারিখে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে।
বাংলাদেশ সরকারের এটুআই প্রোপ্রাম থেকে সংগৃহীত ফেসবুক এবং মোবাইল ফোন অপারেটরদের তথ্য অনুযায়ী, ২৩ থেকে ২৬ মার্চের মধ্যে জনসাধারণের ঢাকা ত্যাগ করার প্রাপ্ত ডেটার সঙ্গে সার্স-কোভ-২ জিনগত বৈশিষ্ট্য বিশ্লেষণ করে দেখা হয়। এ সময় বিপুল মানুষ ঢাকা ছাড়ে। দেশব্যাপী করোনাভাইরাস বিস্তারের এটিই প্রাথমিক কারণ।