সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং সুপ্রিম কোর্টের জৈষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মারা গেছেন। রাজধানীর মগবাজারে আদ্-দ্বীন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি মারা যান। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শোক বার্তায় গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মরণ করেন, দেশের গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক বিষয়ে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক নানা পরামর্শ দিতেন।
২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার মিথ্যা মামলায় বন্দি করলে সেই দুঃসময়ে তাঁকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে আইনি লড়াইয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।
মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ এই আইনজীবীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
রফিক-উল হকের প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে আদ্আ-দ্বীন হাসপাতাল প্রাঙ্গনে। বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদ এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।
এর আগে, গত মঙ্গলবার রাত থেকে ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের শারীরিক অবস্থা খারাপের দিকে যায়। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়।
এ কারণে তাৎক্ষণিক তাঁকে নেয়া হয় আইসিইউতে। পরে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয় বলে জানিয়েছিলেন আদ্-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন। রক্তশূন্যতা, ইউরিন সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত জটিলতায় ভুগছিলেন সুপ্রিম কোর্টের এই সিনিয়র আইনজীবী।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন।
১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক।
বিভিন্ন সময়ে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে কাজ করেছেন।
১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রধান আইন কর্মকর্তা বা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পেশাগত জীবনে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক কখনো কোনো রাজনৈতিক দল করেননি। ছিলেন স্পষ্টবাদী ও সাহসী। নানা সময়ে তাঁকে পাশে পাওয়ায় রাজনীতিবিদদের কাছে তিনি সম্মানীয় ব্যক্তি।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তাঁর জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করে গেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়।
২০১৭ সালে বাম পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়ে।