সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
মানসিক সমস্যা নিয়ে আমাদের সমাজে বেশ কিছু প্রচলিত ও ভ্রান্ত ধারণা বা মিথ রয়েছে।
এ নিয়ে প্রথম পর্বে আমরা কিছু আলোচনা করেছিলাম। এবার পড়ুন দ্বিতীয় পর্ব।
মিথ: মানসিক সমস্যা সবার হয় না। খুব সামান্য মানুষেরই হয়। বাচ্চা ও অল্প বয়স্কদের মধ্যে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় না। কারণ তারা খুব সহজেই মনের কথা খুলে বলতে পারে।
বাস্তবতা: মন বা মানসিক স্বাস্থ্য সবারই রয়েছে। যা কখনও কখনও সমস্যাগ্রস্ত হতে পারে।
ঠিক যেভাবে মাঝে মধ্যে আমাদের শরীর অসুস্থ হয় আর সুচিকিৎসায় সুস্থতা ফিরে আসে।
গবেষণায় দেখা যায়, প্রতি চারজনের একজন জীবনের কোন না কোন সময়ে মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হন।
আর বাচ্চা ও অল্প বয়স্ক প্রতি দশজনের একজন মানসিক সমস্যাগ্রস্ত।
বাংলাদেশে একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ১৪ শতাংশের বেশি শিশু-কিশোর মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত।
আরেক গবেষণা তথ্য হচ্ছে, প্রতি চারজন শিশু-কিশোরের মধ্যে প্রায় তিনজনই তাদের অনুভূতি নিয়ে বন্ধুদের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন।
মিথ: বাবা-মায়ের দোষেই সন্তানদের মানসিক সমস্যা হয়। যে সব বাবা-মা ঠিক মতো লালন-পালন করতে পারেন না, তাদের সন্তানরাই বেশি মানসিক সমস্যায় পড়ে।
বাস্তবতা: শিশুর মানসিক সমস্যা বংশগত বা শারীরিক কারণে হতে পারে।
যেমন- গর্ভকালীন জটিলতা থাকলে অথবা অ্যালকোহল বা মাদক নিয়ে থাকলে। অপমানজনক ও অবজ্ঞাপূর্ণ আচরণ এবং প্রচণ্ড মানসিক চাপের শিকার শিশুর মধ্যেও এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মিথ: বিষণ্নতা রোগ নয়, একটু মন খারাপের মতো।
বাস্তবতা: অনেক সময় মন খারাপ বিষণ্নতার লক্ষণ হতে পারে। দিনের বেশিরভাগ সময় মন খারাপ থাকলে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে হবে।
বিষণ্নতা মানুষের ব্রেইন কেমিস্ট্রিকে পরিবর্তন করে দিতে পারে। যার কারণে ব্যক্তির অনুভূতিতে ব্যাপক (ক্ষতিকর) পরিবর্তন আসতে পারে।
মিথ: বিয়ে দিলে মানসিক সমস্যা ঠিক হয়ে যায়।
বাস্তবতা: মানসিক সমস্যা চিকিৎসার মাধ্যমে ভালো হয়। বিয়ে কোন চিকিৎসা পদ্ধতি নয়। বিয়ে দিলে সমস্যা আরো বেড়ে যেতে পারে।
মিথ: একবার মানসিক রোগের ওষুধ খেলে সারাজীবনই খেয়ে যেতে হয়।
বাস্তবতা: মানসিক সমস্যায় ওষুধ একবার খেলেই সারাজীবন খেতে হয়, এমন নয়। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হয়।
মিথ: সাইকলোজিস্টরা চেহারা দেখেই বলে দিতে পারেন সব কিছু। ব্যক্তি কী চিন্তা করছে, এমনকি পরিচয়ও বলতে পারেন। ভবিষ্যত সম্পর্কেও আগাম ধারণা দিতে পারেন।
বাস্তবতা: মনোবিজ্ঞান হলো চিন্তার প্রক্রিয়া ও আচরণ সংক্রান্ত বিজ্ঞান।
সাধারণত মানুষের আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়াসমূহের বিজ্ঞানসম্মত গবেষণা, বিশ্লেষণের মাধ্যমে চিকিৎসা পদ্ধতির ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ। এখানে চেহারা দেখে বলার কিছু নেই।
সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তিকে কোন পরামর্শ বা ভবিষ্যত নির্দেশনা দেয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই একজন মনোবিজ্ঞানী বা চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানীকে বিজ্ঞানসম্মত আধুনিক পদ্ধতি ও কৌশল প্রয়োগ করতে হয়।
একজন চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী সর্বাধুনিক মনোবৈজ্ঞানিক চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখেন।
আরো জানতে ক্লিক করুন
মানসিক সমস্যা নিয়ে প্রচলিত ধারণা বা মিথ ও বাস্তবতা (পর্ব-১)
মানসিক সমস্যা নিয়ে প্রচলিত ধারণা বা মিথ ও বাস্তবতা (পর্ব-৩)