সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
টানা সাতমাস পর অবশেষে মঙ্গলগ্রহের মাটি স্পর্শ করলো মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা- নাসার নতুন রোবটযান ‘পারসেভারেন্স’।
সব প্রতিকূলতা, প্রতিবদ্ধকতা অতিক্রম করে রোবটটি অক্ষত থাকায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন বিজ্ঞানীরা। অতি উচ্চাভিলাশী এই অভিযানের উদ্দেশ্য হলো রেড প্ল্যানেট খ্যাত মঙ্গলে প্রাণের অস্তিত্ব অনুসন্ধান করা।
বাংলাদেশ সময় শুক্রবার ভোর ৪টা ৫৫ মিনিটে মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করে পারসেভারেন্স। ক্যালিফোর্নিয়ায় নাসার বিজ্ঞানীরা এ সময় মঙ্গল জয়ের উল্লাসে ফেটে পড়েন। একে অপরকে সাধুবাদ জানান গর্বিত ও আত্মবিশ্বাসী মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
অবতরণের মুহূর্ত
মঙ্গলগ্রহের বায়ুমণ্ডলে পৌঁছা মাত্রই রোবটযান পারসেভারেন্সের গতি বেড়ে যায় সেকেন্ডে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার।
জ্বলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকায় বিজ্ঞানীর এর সম্মুখভাগে জুড়ে দিয়েছিলেন তাপ সহ্য করার বিশেষ শিল্ড বা ঢাল। তা দিয়েই বিপুল গতিতে এগিয়ে যায় মঙ্গলপৃষ্ঠের দিকে।
এরপর সুপারসনিক প্যারাশুট আর জেট ব্যাকপ্যাকের মাধ্যমে নিখুঁত পর্যবেক্ষণের পর সমতলে অবতরণ করে পারসেভারেন্স।
পারসেভারেন্সের বিশেষত্ব
এই রোবটযানে যুক্ত রয়েছে অত্যাধুনিক নেভিগেশন সিস্টেম, একাধিক ক্যামেরা ও মাইক্রোফোন এবং বিগ ড্রিল। যার মাধ্যমে নিজের অবস্থান রিয়েল টাইমে নির্ভুলভাবে জানাবে পারসেভারেন্স।
ছবি ও ভিডিও’র পাশাপাশি এবার অডিও পাবে বিজ্ঞানীরা। প্রাণী থেকে থাকলে হয়তো তাদের ভাষাও জানা যেতে পারে এর মাধ্যমে।
আরো একটি বিষ্ময়কর পৃথক যানও বিজ্ঞানীরা যুক্ত করেছেন পারসেভারেন্সের সাথে, তা হলো ড্রোন আকৃতির ছোট্ট একটি হেলিকপ্টার। প্রথমবারের মতো এবার ভিনগ্রহে চপার উড়াবে এই পৃথিবীর মানুষ।
অবতরণের জন্য জেজেরো কেন
পারসেভারেন্সের অবতরণের জন্য বাছাই করা হয় মঙ্গলের নিরক্ষ রেখা বরাবর সুগভীর একটি ক্রেটার বা বিস্তৃত নিচু এলাকা। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন জেজেরো।
তাদের ধারণা, কয়েকশ’ কোটি বছর আগে এই গ্রহে যখন প্রাণের অস্তিত্ব ছিল, তখন সেখানে ছিল বিপুল জলরাশি। আর জেজেরো ছিল একটি লেক বা হৃদ।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই এলাকার পলিমাটি বিশ্লেষণই হবে প্রাণের অস্তিত্ব প্রমাণের প্রধান উপাদান। অনেকেরই ধারণা, এরই মধ্যে মিলতে পারে মাইক্রোঅরগানিজম বা ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীব। বহুপ্রাচীন বাসিন্দাদের জীবন রহস্যও জানা যাবে মঙ্গলপৃষ্ঠের উপাদান বিশ্লেষণ করে।
পারসেভারেন্সের অভিযান
আগামী দুই বছর নমুনা সংগ্রহ, আর ছবি, অডিও, ভিডিও পাঠানোর কাজ করবে পারসেভারেন্স।
যদিও পলিমাটির নমুনা হাতে পেতে বিজ্ঞানীদের অপেক্ষা করতে হবে ২০৩১ সাল পর্যন্ত।