সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে (১ থেকে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী) নতুন করে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ সময় ৯০ লাখ জনগোষ্ঠীকে বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বুস্টার ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন। রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে জাহিদ মালেক বলেন, সামনে বিজয় দিবস আসছে। এই উপলক্ষে টিকার ক্যাম্পেইনের উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে, চলবে ৭ তারিখ পর্যন্ত।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশেষ এই ক্যাম্পেইনে ৯০ লাখ লোককে টিকা দেওয়া হবে। আমরা এর আগে যতগুলো ক্যাম্পেইন করেছি, সবগুলোই সফল হয়েছে। আশা করি, এটিও সফল হবে। এ পর্যন্ত ১৩ কোটি ৯ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ টিকা দিয়েছি, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৮ শতাংশ।
এছাড়াও দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১২ কোটি ৪২ লাখ ডোজ, যা লক্ষ্যমাত্রার ৯৫ শতাংশ। বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৮৬ লাখ ডোজ, যা লক্ষ্যমাত্রার ৫২ শতাংশ।
তিনি বলেন, গত বছরের ২৭ জানুয়ারি থেকে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম শুরু হয়। আমাদের ১২ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনসংখ্যা ১৩ কোটি ৩১ লাখ। প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজে আমরা অনেকদূর এগিয়ে গেলেও বুস্টার ডোজের জন্য অপেক্ষমাণ জনগোষ্ঠী এখনো ৪ কোটি ৫৮ লাখ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আজ পর্যন্ত আমরা ৯টি ক্যাম্পেইন আয়োজন করেছি। ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে টিকা দিয়েছি ১৩ কোটি ৪৯ লাখ ডোজ। আগামী বিজয়ের মাস (ডিসেম্বর) উপলক্ষ্যে ৯০ লাখ জনগোষ্ঠীকে বিশেষ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে বুস্টার ডোজ টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।
বিশেষ এই ক্যাম্পেইনে মোট কেন্দ্র থাকবে ২৮ হাজার ৫৬৯টি। মোট টিকাদান কর্মী থাকবে ৫৭ হাজার ১৩৮ জন। স্বেচ্ছাসেবী থাকবে এক লাখ ৪২ হাজার ৮৪৫ জন। টিকার বর্তমান মজুত আছে এক কোটি ডোজ।
বিশ্ব অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল সচেতনতা সপ্তাহ উপলক্ষ্যে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের ফার্মেসিগুলোতে নিত্যপণ্যের মতো অ্যান্টিবায়োটিক মিলছে।
এর কারণ ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি রোধে আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। অথচ পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে স্বীকৃত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারকারীদের অধিকাংশ মানুষ কোর্স পূর্ণ করে না। আবার যেসব অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে তাদের অধিকাংশের প্রয়োজন নেই। গ্রামাঞ্চলে এটি সবচেয়ে বেশি।
সেখানে গ্রামীণ চিকিৎসকরা যাদের স্বীকৃতি নেই তারা দিচ্ছেন। ঔষধ প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে, কিন্তু তাতেও হচ্ছে না। এটিতে আরও গুরুত্ব দিতে হবে। কিভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের অপব্যবহার হচ্ছে সেটি সাধারণ মানুষকে জানাতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, কখন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা উচিত, সেটি মানুষকে জানাতে হবে। এজন্য সচেতনতা বাড়াতে হবে। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া যাতে (অ্যান্টিবায়োটিক) বিক্রি না হয়, সেটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখতে হবে। (ব্যবস্থাপত্র ছাড়া বিক্রি করলে) প্রয়োজনে ফার্মেসি বন্ধ করে দিতে হবে।