সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় আবারও শিশু মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সুন্নতে খৎনা করাতে গিয়ে মালিবাগের অভিযুক্ত জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে মারা যায় মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী আহনাফ তাহমিদ (১০)।
এ ঘটনায় ওই সেন্টার সিলগালা করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বলা হয়, অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার জন্য হাসপাতালের অনুমোদন প্রয়োজন হয়, কিন্তু এই হাসপাতালের শুধুমাত্র ডায়াগনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন আছে। যে কারণে তাদের অ্যানেস্থেসিয়া প্রয়োগের কোনো সুযোগ নেই।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ জেএস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে এসে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. আবু হোসেন মো. মইনুল আহসান।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে শিশু আহনাফের মৃত্যুর ঘটনায় শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, সামান্য মুসলমানির জন্য শিশুটিকে ওই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ডা. ইশতিয়াক ছিলেন এই খৎনার সার্জন। আর অ্যানেস্থেসিওলজিস্টস ছিলেন ডা. মাহবুব মুর্শেদ।
অভিযোগ অনুসারে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার সময় শিশুটিকে অজ্ঞান করার পর আর তার জ্ঞান ফেরেনি। পরে মিডিয়ার মাধ্যমে জানা যায়, শিশুটি মারা গেছে। অভিযোগ পাওয়ার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথা বলে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।
ডা. মইনুল আহসান আরও জানান, হাসপাতালের বিষয়ে হাতে আসা সব তথ্য পর্যবেক্ষণ-পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অনুমোদন না থাকলেও কোনো রোগীকে অ্যানেস্থেসিয়া দিয়ে থাকলে তা অন্যায় হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আরও তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যিনি অপারেশন করেছেন, তার বিরুদ্ধেও আইনানুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
এদিকে, আহনাফের মৃত্যুর ঘটনায় হাতিরঝিল থানায় মামলা করেছেন তার বাবা ফখরুল আলম।এতে কর্তব্যে অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে। এরই মধ্যে হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস এম মুক্তাদির ও ডা. মাহবুব নামে দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, মালিবাগের জে এস ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড মেডিকেল চেকআপ সেন্টারে অর্থোপেডিক ও ট্রমা সার্জন ডা. এস এম মুক্তাদিরের তত্ত্বাবধানে মঙ্গলবার রাতে সন্তানকে সুন্নতে খৎনা করাতে যান শিশু আহনাফের বাবা ফখরুল আলম ও মা খায়কুন নাহার চুমকি। রাত আটটার দিকে ওটিতে নেওয়ার পর ফুল অ্যানেস্থেসিয়ার প্রভাবে আর ঘুম ভাঙেনি আহনাফের।
এর ঘণ্টাখানেক পর হাসপাতালটির পক্ষ থেকে শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করা হয়। স্বজনদের অভিযোগ, লোকাল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়ার কথা থাকলেও ফুল অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয় আহনাফকে। যে কারণে তার জ্ঞান ফেরেনি।