সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প থেকে শুধু যে বিদ্যুৎ পাওয়া যাবে তা নয়, বরং এটি আন্তর্জাতিক দরবারে বাংলাদেশকে কয়েক ধাপ এগিয়ে দেবে ৷ সোমবার (২৯ মার্চ) সিরডাপ মিলনায়তনে এটমিক রিপোর্টার্স বাংলাদেশ- এআরবি’র এক সেমিনারে এ কথা বলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
‘স্বাধীনতার ৫০ বছর: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি নিয়ে বঙ্গবন্ধুর ভাবনা’ শীর্ষক এই সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি এআরবি’র প্রকাশনার মোড়কও উন্মোচন করেন।
মন্ত্রী জানান, স্বাধীনতার পর ফ্রান্সের সঙ্গে এই প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সত্তরের নির্বাচনী দু’টি সভায় আক্ষেপ প্রকাশ করে তিনি বলেছিলেন, ‘আমরা প্রকল্পটি হারালাম’।
বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হতো বলেও মনে করেন স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। তিনি বলেন, ওনাকে হত্যার পাপে এতদিন আমরা উদ্দেশ্যহীনভাবে হেঁটেছি।
প্রকল্প বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মস্কো গিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন। এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী খোলাখুলি বললেন, ‘আমরা পারমাণবিক বিষয়ে অবগত নই। আপনারা বিশ্বস্ত বন্ধু, বিশ্ব তাকিয়ে দেখবে, ভালো একটি প্রকল্প করে দিন।’
জবাবে পুতিন বলেছিলেন, ভাববেন না। আমি নিজেই এই প্রজেক্ট দেখভাল করব। উল্লেখ্য যে, রূপপুরে কর্মরত রাশিয়ার সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছেই জবাবদিহি করতে হয়।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী আরো জানান, টানর্কি প্রজেক্টে কয়েক ধাপে মনিটরিং করা হয়। সে কারণে ভুলের সুযোগ নেই।
মন্ত্রী বলেন, ‘সাড়ে ৫শ’ ছেলে-মেয়েকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এনেছি। তারা কেউ বলতে পারবে না, এক পয়সা খরচ করতে হয়েছে। ২০ হাজারের মতো লোক কাজ করে দুই শিফটে। আমাদের ছেলেরা কাজের ক্ষেত্রে এ গ্রেড অর্জন করেছে। সারা দুনিয়াতে একটি স্থান করে নিয়েছে।’
করোনার প্রসঙ্গে বিজ্ঞানমন্ত্রী বলেন, দেশে করোনার নতুন ধরন সংক্রমণ বাড়াচ্ছে। সবাইকে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা- বাসসের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আলী হোসেন, ঢাবি’র পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ইসতিয়াক এম সৈয়দ, বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএফএম মিজানুর রহমান।
সেমিনারে অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর জীবনটাই ছিল বিজ্ঞান মনষ্ক। সেই সময়েই তিনি বলেছিলেন, বাংলাদেশে কেরানী শিক্ষা ব্যবস্থা থাকবে না। যুদ্ধের পর যখন কোষাগার শূন্য, তখন তিনি প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ ও অবৈতনিক করেন। একজন সত্যিকারে প্রজ্ঞাবান মানুষের পক্ষেই এটি সম্ভব।’
এআরবি’র সভাপতি আরিফুল সাজ্জাদের সঞ্চালনায় এই সেমিনারে সংগঠনের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাসরুল্লাহ ও সেক্রেটারি ফয়েজ আহমেদ তুষার। এআরবি’র অন্যান্য সদস্যরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।