ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের আফগান যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপরই কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সোমবার মধ্যরাতের আগেই কাবুল থেকে সেনা প্রত্যাহার শেষ করে ওয়াশিংটন। এ ঘটনায় বন্দুক উঁচিয়ে আনন্দ উদযাপন করে তালেবান। তারা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এটা তাদের ঐতিহাসিক বিজয়।
গুলি ফুটিয়ে পরাশক্তি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয় উদযাপন করে তালেবান। এই দলের নেতারা ঐতিহাসিক এই মুহূর্তটিকে দেখছেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব আর বিদেশি হানাদারদের কাছে পরাজিত না হওয়ার ঐতিহ্য রক্ষার লড়াই হিসেবে।
আর যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এটা প্রতিশ্রুতি রক্ষা। তালেবানের সাথে দোহা চুক্তি অনুযায়ী ৩১ আগস্টের আগেই তাই শেষ হয় সেনা প্রত্যাহার। সোমবার রাত ১২টা বাজার ঠিক এক মিনিট আগে কাবুল ছাড়ে সবশেষ বিমান সি-১৭।
এর আগে মাত্র দুই সপ্তাহের কর্মযজ্ঞে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো সরিয়ে নেয় নিজেদের প্রায় ১ লাখ ২৩ হাজার মানুষকে। সর্বশেষ বিমানে ওঠেন আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা কমান্ডার মেজর জেনারেল ক্রিস ডোনেহু। এর পরপরই আফগান যুদ্ধের সমাপ্তির কথা জানায় পেন্টাগণ।
মার্কিন সেনাদের বিদায়ের পর কাবুল বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবানের এলিট ফোর্স বদরি-৩১৩। সেখানে পরিত্যক্ত অনেক সামরিক যান মিললেও যাওয়ার আগে সেসব বিকল করে রেখে গেছে মার্কিন সেনারা।
২০০১ সালের নাইন ইলেভেনে যুক্তরাষ্ট্রের অহংকার খ্যাত টুইন টাওয়ারসহ কয়েকটি সামরিক স্থাপনায় চলে সন্ত্রাসী হামলা। যা সৌদি ধনকুবের ওসামা বিন লাদেনের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদার কাণ্ড বলে জানায় ওয়াশিংটন।
সেই অভিযোগেই জঙ্গিদের চারণভূমি আফগানিস্তানের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র। উৎখাত করা হয় তৎকালীন তালেবান সরকারকে। ক্ষমতায় বসানো হয় প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইকে। তালেবান বিরোধী অভিযান আর আফগান পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রকে ব্যয় করতে হয়েছে কয়েক ট্রিলিয়ন ডলার।
২০ বছরের দীর্ঘতম ও ব্যয়বহুল যুদ্ধের পর সেই তালেবানের কাছেই আফগানিস্তানের ভার দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে নিলো পরাশক্তি আমেরিকা।