সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
এলিনা ইয়াসমিনের গ্রামের বাড়ি রাজবাড়িতে। স্বামী সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন এবং পাঁচ মাসের ছেলে সন্তান আরফানকে নিয়ে থাকতেন মিরপুরের ৬০ ফিটে। ১০ দিন আগে মারা যান এলিনার বাবা। বাবাকে চিরবিদায় জানাতে শিশু সন্তানকে নিয়ে বাড়ি গিয়েছিলেন। বাড়ি থেকে ঢাকায় ফেরার পথে শুক্রবার রাতে রাজধানীর গোপীবাগে তাদের ট্রেনে আগুন লাগে। এরপর থেকেই নিখোঁজ এলিনা ইয়াসমিন। তাকে হন্যে হয়ে খুঁজছেন স্বজনরা। তাদের ধারণা, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনেই এলিনা পুড়ে ছাই হয়ে গেছেন।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় এলিনার ভাসুর রেজাউল করিম সাংবাদিককে বলেন, গতকাল থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করেছি। কোথাও পাইনি। ট্রেন দুর্ঘটনার ওখানেও নেই, হাসপাতালেও নেই। হাসপাতালে থাকা মরদেহ দেখেছি, সেখানেও নেই। সব জায়গায় আমাদের পরিবারের লোকজন খোঁজ নিচ্ছে। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি। গতকালকের পর থেকে এলিনার মোবাইলও বন্ধ। হয়ত ট্রেনেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এর আগে গতকাল এলিনাকে খুঁজতে এসে তার আরেক ভাসুর সাংবাদিককে বলেছিলেন, ছেলে আরফান ও ভাই-ভাবির সঙ্গে একই ট্রেনে আসছিলেন এলিনা। আগুন লাগলে এলিনার ভাই-ভাবি শিশু আরফানকে নিয়ে ট্রেন থেকে নেমে যান। পরে এলিনা ফোন করে বলেন, ‘আমি আর পারছি না।’ এরপর থেকে আর তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
বেনাপোল এক্সপ্রেসে অগ্নিকাণ্ডে এখনো নিখোঁজ ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী চন্দ্রিমা চৌধুরী। ২৮ বছর বয়সী চন্দ্রিমার খোঁজে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে হন্যে হয়ে ছুটছেন পরিবারের সদস্যরা। বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন লাগার আধা ঘণ্টা আগেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয় তার। তবে অগ্নিকাণ্ডের পর থেকে তার খোঁজ মেলেনি।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগে চন্দ্রিমাকে খুঁজতে আসেন তার পরিবারের সদস্যরা।
এসময় চন্দ্রিমার ফুফাতো ভাই অনিন্দ্য পাল সাংবাদিককে বলেন, ‘ঘটনার দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনে ওঠেন চন্দ্রিমা। এরপর বেশ কয়েকবার পরিবারের সঙ্গে কথা হয়। অগ্নিকাণ্ডের পর তার ফোন নম্বরে কল করা হলে তখন ব্যস্ত পাওয়া যায়। এরপর থেকে তার ফোন বন্ধ রয়েছে, কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।’
রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় বড় ভাইয়ের বাসায় থেকে চন্দ্রিমা লেখাপড়া করছিলেন জানিয়ে অনিন্দ্য বলেন, ‘গতকাল রাত থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের সব হাসপাতালে আমরা খুঁজেছি। হাসপাতালের মর্গে গিয়েও তার খোঁজ পাইনি। পাগলের মতো আমরা তাকে খুঁজছি কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে না।’
সূত্র: জাগোনিউজ