খেজুরে যত উপকার

খেজুরের গুণাগুণ খেজুরের উপকারিতা

রশ্মি শাহ্

শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিনের জোগান দিতে ও ক্লান্তি দূর করতে খেজুরের গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে খালি পেটে খেজুর খেলে যে যে উপকার হয়, এবার তা জেনে নিন।

খালি পেটে খেজুর খাওয়ার ১৩টি উপকারিতা

খেজুরে আছে প্রচুর শক্তি, এমিনো এসিড, শর্করা ভিটামিন ও মিনারেল। প্রতিদিন রোজায় আমাদেরকে দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকতে হয়।

এ কারণে আমাদের দেহে প্রচুর গ্লুকোজের ঘাটতি দেখা দেয়। খেজুর আমাদের শরীরে প্রয়োজনীয় সেই গ্লুকোজের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে।

খেজুরের পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা

১. কোলেস্টেরল এবং ফ্যাট- খেজুরে কোন কোলেস্টেরল এবং বাড়তি চর্বি থাকে না। যার ফলে আপনি যখন সহজেই খেজুর খাওয়া শুরু করবেন, তখন অন্যান্য ক্ষতিকর চর্বি জাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

২. প্রোটিন- আমাদের শরীরের জন্য প্রোটিন অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান। খেজুর হল প্রোটিন সমৃদ্ধ। ফলে তা আমাদের পেশী গঠন করতে সহায়তা করে এবং শরীরে অপরিহার্য প্রোটিন সরবরাহ করে।

৩. ভিটামিন- খেজুরে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যাবশ্যক। যেমন, বি১, বি২, বি৩ এবং বি৫।

এছাড়াও ভিটামিন এ১ এবং সি ভিটামিন পাওয়ার আরও একটি সহজ মাধ্যম হচ্ছে খেজুর। সেই সাথে খেজুরে দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়। রাতকানা রোগ প্রতিরোধেও খেজুর অত্যন্ত কার্যকর।

৪. আয়রন- আয়রন মানব দেহের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। খেজুরে প্রচুর আয়রন রয়েছে। ফলে এটা হৃৎপিণ্ডের কার্যক্ষমতা বাড়ায়।

যাদের দুর্বল হৃৎপিণ্ড, তাদের জন্য খেজুর সবচেয়ে নিরাপদ ওষুধ।

৫. ক্যালসিয়াম- ক্যালসিয়াম হাড় গঠনে সহায়ক। আর খেজুরে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। যা হাড়কে মজবুত করে।

খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে।

৬. ক্যানসার প্রতিরোধক- খেজুর পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ এবং প্রাকৃতিক আঁশে পূর্ণ। এক গবেষণায় দেখা যায়, খেজুর পেটের ক্যানসার প্রতিরোধ করে।

আর যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের বেলায় ক্যানসারের ঝুঁকিটাও কম থাকে।

খুব সম্প্রতি একটি গবেষণায় উঠে এসেছে যে, খেজুর Abdominal ক্যান্সার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে এবং অবাক করা বিষয় হচ্ছে, এটি অনেক সময় ওষুধের চেয়েও ভাল কাজ করে।

৭. ওজন হ্রাস- ক্ষুধার জ্বালা কমিয়ে দেয় মাত্র কয়েকটা খেজুর এবং তা পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করে।

এই কয়েকটা খেজুরই শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ করে দেয়।

৮. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে- খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ, যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে।

কখনও কখনও ডায়রিয়ার জন্যেও এটা অনেক উপকারী।

৯. সংক্রমণ- যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এছাড়া গলা ব্যথা, বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি ও ঠাণ্ডায় খেজুর উপকারী।

খেজুর অ্যালকোহলজনিত বিষক্রিয়ার বিপরীতে বেশ কার্যকরী। ভেজানো খেজুর খেলে তা দ্রুত কাজ করে।

১০. রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ- প্রচুর মিনারেলের সঙ্গে আয়রন থাকার কারণে খেজুর রক্তশূন্যতা রোধ করে।

তাই যাদের হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কম, তারা নিয়মিত খেজুর খেয়ে দেখতে পারেন।

১১. কর্মশক্তি বৃদ্ধি- প্রচুর পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি থাকার কারণে খেজুর খুব দ্রুত শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।

সারাদিন রোজা রাখার পর রোজাদাররা যদি মাত্র ২টি খেজুর খান, তবে খুব দ্রুত কেটে যাবে তাদের ক্লান্তি।

১২. স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি- খেজুর নানা ভিটামিনে পরিপূর্ণ। এ কারণে এটি মস্তিষ্কের চিন্তা-ভাবনার গতি বাড়ায়। সঙ্গে স্নায়ুতন্ত্রের কর্মক্ষমতাও বাড়ায়।

এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যেসব শিক্ষার্থী নিয়মিত খেজুর খায়, তাদের দক্ষতা অন্যদের চেয়ে ভাল।

১৩. হৃদরোগ প্রতিরোধ- খেজুরে রয়েছে পটাশিয়াম, যা হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, খেজুর শরীরের খারাপ কোলেস্টেরল কমায় (LDL) এবং ভাল কোলেস্টেরলের (HDL) পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

এ সব কারণে কেবল রমজান মাসে নয়, আমরা খেজুর খাবো সারাবছর।

লেখক: ব্লগার

সংগৃহীত: কোরা ডট কম (বাংলা), তথ্যসূত্র: গুগল