গভীর শ্রদ্ধায় শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করলো জাতি

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

গভীর শ্রদ্ধা আর ভালোবাসায় জাতি স্মরণ করল তার অমর শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। মিরপুর বধ্যভূমি ও রায়েরবাজারে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অসংখ্য মানুষ। ভোরের আলো ফুটতেই বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধগুলোতে ঢল নামে তাদের। এখানেই বাঙালিরি শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে ফেলে রেখেছিল পাকিস্তান বাহিনী। চালিয়ে ছিল পৃথিবীর নৃশংস এক গণহত্যা। সেই ঘটনার ৫০ বছরে শ্রদ্ধা অবনত সর্বস্তরের মানুষ।

সোমবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে আসা মানুষের কণ্ঠে ছিল উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। ছিল ইতিহাস বিকৃতকারীদের রুখে দেয়ার শপথ। সাম্প্রদায়িক শক্তির ধারক-বাহকদের প্রত্যাখ্যান এবং নতুন প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাগিয়ে তুলতে সঠিক ইতিহাসের চর্চার দাবিও ছিল মানুষের মাঝে।

দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকালে কালো পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা, শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, মোমবাতি প্রজ্জলন, শোক র‌্যালি, আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন, সাধারণ জ্ঞান ও হাতের লেখা প্রতিযোগিতা, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

১৯৭১ সালের এই দিনে চূড়ান্ত বিজয়ের মাত্র দু’দিন আগে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের এদেশীয় দোসররা পরিকল্পিতভাবে দেশের কৃতী সন্তানদের হত্যা করে। তারপর থেকে দিনটি শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।

দেশ ও জাতির জন্য আত্মোৎসর্গকারী বীরদের প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামীম উজ জামান। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকীব আহমেদ চৌধুরি। কিছুক্ষণ নীরবতার পর বেজে ওঠে বিউগলের করুণ সুর।

এরপর জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষে শ্রদ্ধা জানান মন্ত্রী আ ক মমোজাম্মেল হক। সকাল ৯ টার দিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপর বিএনপি, জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ, আওয়ামী যুবলীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।

মুক্তিযুদ্ধের শেষ লগ্নে ১০ থেকে ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে আল-বদর বাহিনী বাঙালী জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে মোহাম্মদপুর ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে স্থাপিত আল-বদর ঘাঁটিতে নির্যাতনের পর রায়েরবাজার বধ্যভূমি ও মিরপুর কবরস্থানে হত্যা করে।