তামান্না ফারজানা, যশোর
যশোরে এই প্রথম সন্তানের জন্ম দিলেন এইচআইভি আক্রান্ত আক্রান্ত এক প্রসুতি মা। গতকাল (২৭ আগস্ট) ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এইচআইভি আক্রান্ত গর্ভবতী মায়ের সিজার করা হয়। বর্তমানে মা ও নবজাতক দু’জনই সুস্থ আছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক।
চিকিৎসকরা জানান, যশোর সদর উপজেলার বাসিন্দা ওই নারী সন্তান সম্ভবা হওয়ার পর শুধুমাত্র একবার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চেক আপ করাতে আসেন। এরপর তিনি আর আসেননি। গর্ভধারণের ৩৮ সপ্তাহ পর গত সপ্তাহে শরীর দুর্বল লাগায় তিনি চেকআপ করাতে আসেন।
সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে জানা যায়, তিনি এইডসে আক্রান্ত এবং রক্ত স্বল্পতায় ভুগছেন। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাকে রক্ত দেয়াসহ ঝুঁকি কমাতে এন্টিভাইরাল থেরাপি দেন। এতে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হলে তার অপারেশন করা হয়।
চিকিৎসকদের পাঁচ সদস্যের একটি বোর্ড এই অপারেশন সম্পন্ন করেন। বোর্ডের সদস্যরা হলেন- হাসপাতালের আবাসিক সার্জন ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নিলুফার ইয়াসমিন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জাফর ইকবাল, ডা. মাসকিয়া জান্নাতি ও ডা. ইদ্রিস আলী এবং রেজিস্ট্রার ডা. গোলাম মোর্তুজা।
জানা গেছে, এটিই এই নারীর প্রথম সন্তান। তার বিয়ের তিনমাস পর তিনি সন্তান সম্ভবা হন। তবে স্বামীর এইচআইভি টেস্ট নেগেটিভ আসে। নবজাতকের এইচআইভি টেস্ট এখনও করা হয়নি। আক্রান্ত হলে তাকে চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ্ করা সম্ভব হবে বলে জানান চিকিৎসকরা।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জানান, যশোরে এই প্রথমবারের মত কোন এইচআইভি আক্রান্ত নারীর সিজার ও সন্তান জন্ম দেয়ার ঘটনা। এ ধরনের অপারেশন অত্যন্ত সংবেদনশীল। তবে ঝুঁকিমুক্তভাবে তা সম্পন্ন হয়েছে।
বর্তমানে আতংকিত না হওয়ার জন্য ওই নারীর পরিবারকে কাউন্সিলিং করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে সব ধরনের অপারেশনের ক্ষেত্রে এইচআইভি টেস্ট বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে বলেও জানান হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক।
যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের আরএমও ডা. পার্থ প্রতীম চক্রবর্তী জানান, এই নারীর চিকিৎসা চলছে সম্পূর্ণ সরকারি খরচে।
বলা বাহুল্য, ২০০৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত যশোরে ১৪৬ জন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী পাওয়া যায়। এর মধ্যে মারা গেছেন ১৩ জন।