আগামীকাল বাণিজ্য মেলা শুরু

বাসস

ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় আগত দর্শনার্থী বা ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয় সে ব্যাপারে সর্বোচ্চ নজরদারি রাখা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম ।
শনিবার পূর্বাচল নতুন শহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টারে ২৮ তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।


আগামীকাল রোববার থেকে মাসব্যাপী ২৮তম ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা শুরু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলার উদ্বোধন করবেন।


প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেলায় কোনো ভোক্তা বা দর্শনার্থী যেন প্রতারিত না হয় সেজন্য ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হবে।

এ ব্যাপারে ভোক্তা অধিকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের  নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে মেলায় অভিযোগ বক্স ও হেল্প ডেক্স খোলা রাখা হবে। অভিযোগ পেলেই যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবছর মেলা প্রাঙ্গনকে দৃষ্টিনন্দন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে তুলে ধরার জন্য মেলার প্রবেশদ্বার করা হয়েছে কর্ণফুলি ট্যানেলের আদলে।

এক পাশে রুপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং অপর পাশে বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনালের প্রতিচ্ছবি রাখা হয়েছে।


এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্য রপ্তানিকে বহুমুখীকরণের মাধ্যমে রপ্তানি  বাড়ানো। পোশাকের উপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে  রপ্তানি পণ্যর বহুমুখীকরণ করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আমরা এখন পাট এবং চামড়া শিল্পের উপরে বিশেষ নজর দিচ্ছি। এই দুই খাতে অপার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে পণ্যকে বর্ষপণ্য ঘোষণা করুক না কেন। আমরা সারা বছর সেটা নিয়ে কাজ করবো।

ভোক্তারা যেন প্রতারিত না হয়, এজন্য সর্বোচ্চ নজরদারি থাকবে : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী


তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে ৬ গুণ রপ্তানি বেড়েছে । আমরা সেখানে বসে থাকতে চাইনা। পণ্য বহুমুখীকরণ করা গেলে দেশের রপ্তানি  আয় একশো বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আহসানুল ইসলাম জানান, এবার মেলায়, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, ইরান, ভারত, পাকিস্তানসহ ১৬ থেকে ১৮ টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন থাকবে। মেলায় ই-কমার্স সেবাকে আরো বেগবান করা হবে। যাতে সারা দেশের মানুষ এই সুবিধা পেতে পারে।


মেলায় বিদেশিদের আনতে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তেরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকটা দেশের মিশনে কমার্শিয়াল কাউন্সিলর রয়েছে। তাদেরকে এবার আমরা মেলায় নিয়ে আসবো এবং পণ্যের ব্র্যান্ডিং করা হবে।


এ সময় বাণজ্যি মন্ত্রণালয়রে সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলনে, গত দুই বছর রাস্তার কছিুটা সমস্যা ছিলো। এবার রাস্তা অনকে ভালো, ফলে অনকে র্দশর্নাথী আসবে বলে আশা করছি। বাণিজ্য মেলা মানুষের কাছে বার্ষিক একটা ঐতিহ্যবাহী মেলায় পরিনত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।


রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান এ.এইচ.এম আহসান বলেন, মেলাকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তার বিষয় থাকে। সেজন্য ৫০ জনের আউটসোর্সিং করে নিরাপত্তার জন্য লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও পুলিশ-আনসার থাকবে। প্রয়োজনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসাবে র‌্যাব কাজ করবে।

পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য ১০০ জন ক্লিনার নিয়োগ করা হয়েছে। এবারও মেলায় দর্শনার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফার্মগেইট থেকেও বাসে উঠা যাবে। ফলে খুব অল্প সময় মেলা কেন্দ্রে আসা যাবে।


ইপিবি সূত্রে জানা গেছে, এবারের বাণিজ্যমেলায় দেশীয় পণ্যের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, হংকং, সিঙ্গাপুর, নেপালসহ বিভিন্ন দেশ অংশ নেবে। পণ্য প্রদর্শনের পাশাপাশি দেশীয় পণ্য রপ্তানির বড় বাজার খোঁজার লক্ষ্য রয়েছে।


জানা গেছে, দেশীয় বস্ত্র, মেশিনারিজ, কার্পেট, কসমেটিকস, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস, পাট ও পাটজাত পণ্য, গৃহ সামগ্রী, চামড়া ও জুতাসহ চামড়াজাত পণ্য, স্পোর্টস গুডস, স্যানিটারিওয়্যার, খেলনা, স্টেশনারি, ক্রোকারিজ, প্লাস্টিক, মেলামাইন পলিমার, হারবাল ও টয়লেট্রিজ, ইমিটেশন জুয়েলারি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, ফাস্টফুড, হস্তশিল্পজাত পণ্য, হোম ডেকর, ফার্নিচার ইত্যাদি পণ্য মেলায় প্রদর্শিত হতে যাচ্ছে।


সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুর রহিম খাসহ ইপিবির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।