সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
গত ২৪ ঘণ্টায় (সোমবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনায় দেশে মারা গেছেন ১১২ জন। একই সময় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৭ হাজার ৬৬৬ জনের। বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ সব তথ্য জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে দেশে টানা তৃতীয় দিন করোনাভাইরাসে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হলো। এ পর্যন্ত করোনায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৯ লাখ ৪ হাজার ৪৩৬। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৪ হাজার ৩৮৮ জনের। সুস্থ হয়েছেন ৮ লাখ ১১ হাজার ৭০০ জন।
এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মারা যান ১০৪ জন। এ সময় রোগী শনাক্ত হয় ৮ হাজার ৩৬৪ জন। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা ধরা পড়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত এটাই ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চসংখ্যক রোগী শনাক্তের রেকর্ড।
শেষ ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে খুলনা বিভাগে। ঢাকা বিভাগে মারা গেছে ২২ জন। রাজশাহী বিভাগে মারা গেছে ২১ জন। বাকিরা অন্য বিভাগের।
২৪ ঘণ্টায় মোট ৩১ হাজার ৯৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে করোনাশনাক্ত দাঁড়িয়েছে ২৩.৯৭ শতাংশ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। দেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর ধীরে ধীরে সংক্রমণ বাড়তে থাকে। গত বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ কমতে থাকে।
দেশে এ বছরের মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় ৫ এপ্রিল থেকে সাতদিনের জন্য গণপরিবহন চলাচলসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। পরে তা আরও দু’দিন বাড়ানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে ‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরু হয় ।
পরে তা আরও বাড়িয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত করা হয়। কিন্তু দেশে এখন সংক্রমণ পরিস্থিতি এপ্রিলের মতো ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে। এবার করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয় ঈদুল ফিতরের পরপরই। ভারত সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে রোগী দ্রুত বাড়তে থাকে।
পরে তা আশপাশের জেলাগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে।বর্তমানে দেশের অধিকাংশ জেলা করোনার ভয়াবহতার ঝুঁকিতে রয়েছে। ১৪ থেকে ২০ জুন নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনায় নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাপ্তাহিক রোগতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে।
পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হওয়ায় ২২ জুন থেকে ঢাকাকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন রাখার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সেই প্রচেষ্টায় ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
এরপরও করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় সোমবার সকাল থেকে সারা দেশে সব গণপরিবহন ও মার্কেট-শপিং মল বন্ধ করা হয়েছে। আর বৃহস্পতিবার শুরু হবে সর্বাত্মক লকডাউন, বন্ধ থাকবে সব সরকারি-বেসরকারি অফিসও।