সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
অবৈধ ও অননুমোদিত সব হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। সচিবালয়ে স্বাস্থ্যখাতে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতে অনেক সমস্যা রয়েছে, বিষয়টি তিনিও জানেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ডা. সামন্ত লাল সেন দুর্নীতির ব্যাপারে ছাড় না দেওয়ার প্রত্যয় জানান। তিনি বলেন, ’এই অননুমোদিত, লাইসেন্স ছাড়া হাসপাতাল এগুলো চলতে দেওয়া যাবে না। বিষয়টি আমি একদিনে পারব না।
কিন্তু আমার মেসেজ হচ্ছে যে, এই অননুমোদিত ক্লিনিক, হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা অবশ্যই নেওয়া হবে। আমি নিজেও ভুক্তভোগী এগুলোর জন্য’-ডা. সামন্ত লাল সেন
১৯৮২ সালের মেডিকেল অ্যান্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস অ্যান্ড ল্যাবরেটরিস অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া কোনো হাসপাতাল, ক্লিনিক বা ডায়াগনেস্টিক সেন্টার চালানোর সুযোগ নেই।
করোনা ভাইরাস মহামারীর মধ্যে ঢাকার রিজেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসার নামে প্রতারণা ও জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটনের পর জানা যায়, অনুমোদন ছাড়াই চলছে ওই হাসপাতাল।
২০২০ সালের নভেম্বরে ঢাকার আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে বরিশাল মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার আনিসুল করিমকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপর জানা যায়, ওই হাসপাতালেরও সেবা দেওয়ার অনুমোদন নেই।
এরপর সারা দেশে অনুমোদিত ও অনুমোদনহীন বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের তালিকা পাঠাতে বিভাগীয় পরিচালকদের নির্দেশ দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিভাগীয় কার্যালয়গুলোর পাঠানো তথ্য নিয়ে একটি তালিকা তৈরি করা হয়।
ওই তালিকায় সারাদেশের ১১ হাজার ৯৪০টি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনেস্টিক সেন্টারের নাম আসে, যারা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদন ও যথাযথ সুযোগ-সুবিধা ছাড়াই চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সে সময় বলেছিল, ওই তালিকার মধ্যে ২ হাজার ৯১৬টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক লাইসেন্সের জন্য কোনো আবেদনই করেনি। ৯ হাজার ২৪টি হাসপাতাল-ক্লিনিকের মধ্যে কোনো কোনোটি লাইসেন্সের জন্য আবেদন করে চিকিৎসা দেওয়া শুরু করলেও অনুমোদন পায়নি।
আবার কোনো কোনোটির লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, সেই অর্থে সেগুলোও অবৈধ। ওই তালিকার পর কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে আড়াই হাজারের মত অনুমোদনহীন হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধ করে দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বিভিন্ন ক্লিনিককে জরিমানাও করা হয়।
এরপর ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে তখনকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে দাবি করেন, অনুমোদনহীন কোনো ক্লিনিক-হাসপাতাল ঢাকায় আর ‘চালু নেই’।
মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, বিএইচআরএফের
সভাপতি রাশেদ রাব্বি, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।