সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলি চৌধুরী সিনেট ভবনে চলছে ৫ম বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সম্মেলন এবং ইন্টারন্যাশনার কাউন্সিল অব সাইকোলজি এডুকেটরস (আইকপ) কনফারেন্স-২০১৯। সম্মেলনের তৃতীয় দিনে কমিউনিটি মেন্টাল হেল্থ, দুর্যোগ-বিপর্যয়ে মানসিক স্বাস্থ্য, মনোবৈজ্ঞানিক থেরাপির কার্যকারিতা এবং সমসাময়িক মনোবৈজ্ঞানিক সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করা হয়।
এছাড়াও আত্মহত্যার ঝুঁকি মোকাবেলা, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুর শিক্ষা গ্রহণে থেরাপির ভূমিকা এবং প্র্যাকটিস ও গবেষণা নৈতিকতার ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও হয় সেখানে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে চারদিনব্যাপী এই সায়েন্টিফিক কনফারেন্সের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বিভাগ এবং বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি।
সোসাইটির সভাপতি ডক্টর মাহমুদুর রহমান এবং ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞান সংস্থার সাবেক সভাপতি ডক্টর গ্রাহাম পাওয়েলসহ দেশি-বিদেশি চিকিৎসা মনোবিজ্ঞানী, মনোবিজ্ঞানী, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্টরা এতে অংশ নেন।
একবিংশ শতাব্দীতে বাংলাদেশে গুণগত মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতকরণকে প্রতিপাদ্য ধরে গতকাল শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী দিনে ছিল ব্যক্তিত্ব সমস্যা, ফ্যামিলি থেরাপি, সিজোফ্রেনিয়া রোগির পরিচর্যা, একাডেমিক রাইটিং, সাইকোড্রামা ও সাইকোলজিক্যাল অ্যাসেসমেন্ট’সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কর্মশালা।
সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শহীদ আখতার হোসেন, আই.ইউ.বি.এ.টি’র উপ-উপাচার্য ড. হামিদা আক্তার বেগম, ব্রিটিশ মনোবিজ্ঞান সংস্থার সাবেক সভাপতি ড. গ্রাহাম পাওয়েল এবং বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সভাপতি ড. মাহমুদুর রহমান।
ড. শহীদ আখতার হোসেন তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমান বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাদের যোগ্যতা, পেশাদারিত্ব ও গুণগত সেবার কারণে সাধারণ মানুষদের মধ্যে মানসিক বিষয়ক সচেতনতাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
২০৩০ সালের মধ্যে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে আত্মহত্যা ও বিষন্নতার ভয়াবহতা নিয়ে আশঙ্কা করেন ড. হামিদা আক্তার বেগম। তাঁর বক্তব্যে দক্ষ ও যোগ্য মানসিক স্বাস্থ্য সেবক তৈরির তাগিদ দেন। প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন ডক্টর হামিদা আক্তার।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ড. গ্রাহাম পাওয়েল বলেন, বাংলাদেশ মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় অনেক এগিয়েছে। কেবল স্বাস্থ্য সেবায় নয়, সমাজের সার্বিক ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও মনোবিজ্ঞানের কার্যকারিতা রয়েছে বলে জানান তিনি। তবে এক্ষেত্রে কাঠামোবদ্ধ ও সমন্বিত পরিকল্পনার প্রয়োজন বলে মনে করেন ড. পাওয়েল।
সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারপার্সন ড. কামরুজ্জামান মজুমদার, নাসিরুল্লাহ সাকোথেরাপি ইউনিটের পরিচালক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী এবং বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক জহিরউদ্দিন।
সারাদেশের ছয় শতাধিক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, কাউন্সেলিং সাইকোলজিস্ট, সাইকোলজিস্ট, সাইকিয়াট্রিস্ট, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী এই সম্মেলনে অংশ নেন।
কী থাকছে ২৫ মার্চ
২৫ মার্চ সোমবার থাকছে পোস্ট কনফারেন্স ওয়ার্কশপ। এর মধ্যে রয়েছে ডায়ালেক্টিক্যাল বিহেভিয়র থেরাপি, ভবিষ্যৎ পেশা নির্ধারণে সহায়তা, ব্রেইনে আঘাত জনিত সমস্যায় নিউরোসাইকোলজির ভূমিকা, মাইন্ডফুলনেস, মানসিক স্বাস্থ্য আইন এবং মানসিক স্বাস্থ্য রিহ্যাবিলিটেশন আইন, ট্রাঞ্জেকশনাল এ্যানালাইসিস, মেটা এ্যানালাইসিস ইত্যাদি বিষয়।