মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির ওয়েবিনার

মানসিক স্বাস্থ্য দিবস

মেন্টাল হেলথ ডেস্ক

আজ রোববার বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এক ওয়েবিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ‘অসম বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্য’ শীর্ষক এই ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান জোবেদা খাতুন।

ওয়েবিনারে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, ঢাবির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি- বিসিপিএস সভাপতি ড. মোহম্মাদ মাহমুদুর রহমান, ঢাবির ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম শামীম আক্তার প্রমুখ।

মানসিক স্বাস্থ্য

ওয়েবিনারে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট, চিকিৎসক, সাইকোথেরাপিস্টসহ বিভিন্ন পেশাজীবী গ্রুপের তিন শতাধিক সদস্য অংশ নেন। এতে সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম বলেন, মানসিক অসুস্থতা প্রতিরোধে অনেক কাজ করার সুযোগ রয়েছে। হতাশা, কর্মস্পৃহা, মানসিক চাপকে শিশুকাল হতে চিহ্নিত করা হলে এই অস্থিরতা, প্রতিযোগিতা ও বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, করোনাকালে বৈষম্যহীনতা পরিষ্কারভাবেই বিশ্বজুড়ে ফুটে উঠেছে। যার প্রভাব আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখা গিয়েছিল এবং ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ সংকট উত্তরণের সেক্ষেত্রে গুরুত্বপূণ ভূমিকা রেখেছিল।

মানসিক স্বাস্থ্য দিবসের ওয়েবিনার

ঢাবি’র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান জোবেদা খাতুন স্বাগত বক্তব্যে বলেন, শারীরিক স্বাস্থ্যের মত মানসিক স্বাস্থ্যের পরিচর্যা প্রয়োজন। তবে বিশ্ব জুড়েই মানসিক্ স্বাস্থ্য অবহেলিত। এ ব্যাপারে তিনি সমাজের স্টিগমা ও কুসংষ্কার দূর করে প্রতিটি মানুষের কাছে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দেয়ার তাগিদ দেন।

ড. মোহম্মদ মাহমুদুর রহমান বলেন, কোভিড-১৯ মহামারির আর্থ-সামাজিক প্রভাবেও দেখা গেছে, দারিদ্র্য ও বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠীর মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যার প্রকোপ অতিমাত্রায় বেড়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যার শতকরা ১৭ ভাগ মানুষ কোন না কোন মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে।

তাদের মধ্যে মাত্র ৮ শতাংশ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে। বাকি ৯২ শতাংশ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা থেকে। এ পরিস্থিতি দূর করতে একদিকে যেমন বাড়াতে হবে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার মান, তেমনি অন্যদিকে মানসিক চাপ ও মানসিক স্বাস্থ্যহানির গভীর কারণসমূহ দূর করার জন্য নিতে হবে গবেষণালব্ধ কার্যকর স্ট্রাটেজি।

ড. মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, আমাদের জাতীয় লক্ষ্য হতে হবে আগামী দশ থেকে বিশ বছরের মধ্যে দেশে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত মানুষের হার ৭ শতাংশে নামিয়ে আনার ব্যবস্থা করা।

পরে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে রোববার রাত ৮টা এবং সাড়ে ৯টায় ফেসবুকে আরও দু’টি আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া, আগামী ২৯ ও ৩০ অক্টোবর এবং ৫ নভেম্বর মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অনলাইন জুমে অনুষ্ঠিত হবে গুরুত্বপূর্ণ ও যুগোপযোগী আরো ১১টি কর্মশালা।

কর্মশালার মধ্যে রয়েছে- আপনি কি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট? আমাকে নিয়ে আমি যেভাবে ভালো থাকতে পারি; আত্মহত্যা প্রতিরোধ করি; দুই প্রজন্মের সেতুবন্ধন: দূরত্ব নয় বন্ধুত্ব; নারী ও পুরুষের মনো:যৌনসমস্যা: মনোবৈজ্ঞানিক সমাধান ও করণীয়; রোমান্টিক সম্পর্কের উন্নয়ন: আপনার করণীয় কি? ইত্যাদি।