এমআইটির কারিকুলামে ঢাকায় স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুল চালু

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি- এমআইটি’র ডিজাইনে রাজধানীর গুলশানে চালু হচ্ছে বিশ্বখ্যাত স্টিম (এসটিইএএম) কারিকুলামভিত্তিক ‘স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুল’। এরই মধ্যে প্রতিষ্ঠানটির অনুমোদন দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। অক্টোবর থেকেই পুরোদমে চালু হচ্ছে নতুন ধারার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

স্টিম কারিকুলামে বিজ্ঞান (এস), প্রযুক্তি (টি), প্রকৌশল (ই) ও গণিত (এম) নির্ভর বিশ্বমানের শিক্ষা ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে কলা (এ)। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বপ্রথম এই শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন ইউএসএ। এরপরই তা ছড়িয়ে পড়ে অস্ট্রেলিয়া, চীন, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও যুক্তরাজ্যে।

বাংলাদেশের প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে এই স্টিম কারিকুলাম বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। শিগগিরই রাজধানীর অদূরে নিজস্ব ক্যাম্পাসে আরো বড় পরিসরে চালু হবে এই স্কুল।

স্টিম কারিকুলামের মৌলিক বৈশিষ্ট্য

  • এটি বর্তমান বিশ্বের চলমান সমস্যাগুলোকে গুরুত্ব দেয়।
  • শিশুদের টিম ওয়ার্কে সৃষ্টিশীল কাজে সম্পৃক্ত করে
  • শিশুর অনুসন্ধিৎসু মানসিকতা তৈরি করে
  • বাধাহীন চিন্তা শক্তির মাধ্যমে নতুন নতুন আবিষ্কারের ভাবনা জাগিয়ে তোলে।
  • শিশু একই সমস্যার বিকল্প ও মহুমুখী সমাধান খুঁজে পেতে সমর্থ হয় এবং ব্যর্থতাকেও নিজের জীবনের অংশ বলে ভাবতে শেখে।
  • প্রতিকূলতা মেনে নিয়ে প্রকৃতি থেকে আহরিত সম্পদকে ভবিষ্যতে বিজ্ঞানভিত্তিক পন্থায় কাজে লাগানোর দক্ষতা তৈরি হয়।
  • এই শিক্ষা ব্যবস্থা শিশুদের দৃঢ়চেতা এবং উদ্যোমী করে গড়ে তোলে।

যেমন- ম্যাপল ট্রির বীজ মাটিতে কীভাবে পড়ে, তা দেখে হেলিকপ্টারের প্রোটোটাইপ এঁকেছিলেন লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি। ড্যান্ডিলায়নের বীজ পর্যবেক্ষণ করে তিনি প্যারাসুটের প্রোটোটাইপ আঁকেন। এগুলো স্টিম এডুকেশনেরই অংশ।

স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুল সূত্র জানায়, ইংরেজি মাধ্যমের এই স্কুলের সব শিক্ষকই বিদেশি। এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ডক্টর লরি সানসেজ। স্কুলে থাকছে পরিপূর্ণ শিক্ষার ব্যতিক্রমী পরিবেশ, যা বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য ভবিষ্যত চাহিদা অনুযায়ী নিজের মেধা ও জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করার সহায়ক হবে।

স্কুলের অন্যতম সুবিধা

  • ছাত্রসহায়ক পরিবেশ
  • সহায়ক শিক্ষা
  • পাঠদানে রেজিয়া এমিলা অ্যাপ্রোচ
  • সোশ্যাল-ইমোশনাল লার্নিং
  • প্রজেক্ট বেজড লার্নিং
  • নেটিভ ইংলিশ স্পিকিং শিক্ষক

করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় স্কুলের প্রবেশমুখেই স্থাপন করা হয়েছে ‘চেহারা শনাক্তকরণ এবং তাপমাত্রা পরিমাক’ যন্ত্র। অননুমোদিত ব্যক্তিদের স্কুলে প্রবেশ প্রতিরোধে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ ক্যামেরা, যা মাস্ক পরিহিত ব্যক্তিকেও শনাক্ত করতে সক্ষম।

স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুলের ভেতরে থাকছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বায়ু জীবাণুমুক্তকরণ ব্যবস্থা, যা অনবরত চলমান থাকে। স্কুল শুরুর আগে ও পরে শ্রেণিকক্ষের ভেতরে ও বাইরে থাকছে আল্ট্রা ভায়োলেট প্রযুক্তিতে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থাও। শ্রেণীকক্ষ এবং মিলনায়তনগুলো সুপ্রশস্ত হওয়ায় সত্যিকার সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক নির্দেশনা অনুসারে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে স্কুলটি অনলাইন ও অফলাইন দুই পদ্ধতিতেই শিশুদের নিরবচ্ছিন্ন পাঠদান নিশ্চিত করবে। স্কুলটির প্রধান শাখায় ফুটবল ও অন্যান্য খেলাধুলার জন্য বিশাল মাঠ, ক্রিকেট, বাষ্কেটবল, ব্যাডমিন্টন, সুইমিংপুল, অডিটোরিয়ামসহ নানা সুবিধা থাকবে।

খেলাধুলা ও শরীরচর্চার পাশপাশি শিশুদের জন্য গান, নৃত্য, চারু ও কারু শেখার সুবিধাও থাকবে। সফলতার সঙ্গে প্রধান ক্যাম্পাস চালু করার পর একই সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত আরও শাখা খুলবে স্মার্ট ইনোভেশনস স্কুল। ২১ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জটিল চিন্তা, যোগাযোগ, সমন্বয় ও সৃষ্টিশীলতার মতো প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনে স্পিম শিক্ষা ব্যবস্থা সহায়ক হবে বলে মনে করা হচ্ছে।