আত্মহত্যার আগাম সতর্ক সংকেত

আত্মহত্যা

বাংলাদেশে আত্মহত্যায় মারা যায় বছরে ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ। একেবারেই কম নয়। দ্রুত পরিবর্তনশীল সমাজে অনেকেই আত্মহত্যার শিকার হতে পারেন। কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের মাঝে এর ঝুঁকি ক্রমেই বাড়ছে। তাই প্রাণঘাতী এই সমস্যা থেকে তাদের উদ্ধারে সমাজের যে কেউ-ই হতে পারেন সারথী। এজন্যে আত্মহত্যার আর্লি ওয়ার্নিং সাইন বা আগাম সতর্ক সংকেত সম্পর্কে জানা প্রয়োজন।

আত্মহত্যার আর্লি ওয়ার্নিং সাইন বা আগাম সতর্ক সংকেত হলো- মরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করা, নিজেকে আঘাত করা, হঠাৎ করে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন, ঘুম না হওয়া, খাওয়া-দাওয়ায় আগ্রহের অভাব, তীব্র হতাশা, পাপবোধ ইত্যাদি। এছাড়াও ব্যক্তির মৃত্যু সংক্রান্ত সংগীত, চিত্রাঙ্কন ও লেখায় তার আগ্রহ বেড়ে যেতে পারে। নিজের প্রিয় জিনিসপত্র অন্যদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া, সবার কাছে ক্ষমা চাওয়া, এ সবই আত্মহত্যার লক্ষণ।

যারা আত্মহত্যার চিন্তা করে, তাদের কথা-বার্তায় সরাসরি মৃত্যুর কথা প্রকাশ পায়। এছাড়াও কিছু শারীরিক পরিবর্তন দেখা যায়। যেমন- দ্রুত ওজন বেড়ে যাওয়া, হঠাৎ করেই নিজের যত্ন না নেওয়া, অপরিচ্ছন্ন থাকা, শরীরের বিভিন্ন জায়গায় দাগ, কাটা, ঘা বা ইনজেকশনের সূচের দাগ। কোন ব্যক্তি একাধিকবারও আত্মহত্যার চেষ্টা চালাতে পারে।

প্রতিবছর ১০ সেপ্টেম্বর পালিত হয়ে আসছে বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস। ২০১৮ সালে এ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল “Working Together to Prevent Suicide”। আত্মহত্যা প্রতিরোধ সম্ভব, যখন আপনি নিজেই হবেন একজন মূল কর্মী। আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে পরিবর্তন আনতে পারি। এজন্যে প্রমাণভিত্তিক কর্মসূচি নির্ধারণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে, যাতে বিশ্বের আনাচে কানাচে যারা আত্মহত্যা প্রতিরোধের সংগ্রাম করছে, তাদের পর্যন্ত পৌঁছায়।

আমাদের সবাইকে একটি সাধারণ লক্ষ্য ঠিক করতে হবে এবং তাতে সম্মিলিতভাবে অংশ নিতে হবে। বিভিন্ন শ্রেণীর অংশগ্রহণমূলক প্রতিনিধিত্ব এই দলে থাকতে পারে। যেমন- ধর্মীয় নেতা, শিক্ষাবিদ, গবেষক, শ্রমজীবী, মাদকাসক্ত কেন্দ্রের সদস্য, জরুরি সেবার সদস্য, স্বাস্থ্য বিভাগের সদস্য, সরকার, গণমাধ্যম, সমাজ কর্মী, মানসিক স্বাস্থ্য পেশাজীবী, আত্মহত্যা প্রবণ ব্যক্তি, আত্মহত্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার।