সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক
ফেসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে ছাত্রের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ও বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে ভাইরাল হওয়া সেই কলেজ শিক্ষিকা খায়রুন নাহারের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মাত্র ছয় মাস আগে কলেজছাত্র ২২ বছর বয়সী মামুনকে বিয়ে করেছিলেন ৪০ বছর বয়সী এই শিক্ষিকা।
তবে গভীর রাতে খায়রুন নাহার আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি করছেন মামুন। পরে রোববার (১৪ আগস্ট) সকালে নাটোর শহরের বালারিপাড়া এলাকার হাজী নান্নু মোল্লা ম্যানশনের চারতলার ফ্ল্যাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা ওই বাসায় ভাড়া থাকতেন।
এ ঘটনায় কলেজ শিক্ষিকার স্বামী মামুনকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রাত তিনটার দিকে মামুন প্রতিবেশীদের ডেকে এনে বলেন যে, তার স্ত্রী খায়রুন নাহার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
প্রতিবেশীরা তার ঘরে গিয়ে দেখতে পান খায়রুন নাহারের নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে শোয়ানো। এতে তাদের সন্দেহ হলে মামুনকে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন তারা।
নাটোর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর পরিদর্শক শাহাদাত হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া মামুনকে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
খায়রুন নাহার ছিলেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজীপুর এম হক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক। জানা যায়, প্রথমে তিনি বিয়ে করেছিলেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলায়। সেই স্বামীর ঘরে একজন সন্তানও ছিল।
পারিবারিক কলহে সংসার বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারেননি। তারপর কেটে যায় অনেক দিন। একপর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) পরিচয় হয় ২২ বছরের যুবক মামুনের সঙ্গে। মামুনের বাড়ি একই উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের পাটপাড়া গ্রামে। নাটোর এন এস সরকারি কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
ফেসবুক মেসেঞ্জারে প্রথমে পরিচয়; তারপর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। ২০২১ সালের ২৪ জুন তাদের প্রথম পরিচয়। তারপর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর তারা দুজন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ১৩ মাসের সম্পর্কে রয়েছে ভালোবাসার গভীরতা।
আর এ গভীরতা থেকেই বিয়ে করেন তারা। ছয় মাস আগে বিয়ে করলেও তারা তা আত্মগোপন করেন। সপ্তাহখানেক আগে বিয়ের খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। খায়রুন নাহার জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হওয়ার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
প্রতিটা দিন প্রতিটা ক্ষণ তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে থাকেন। আত্মহত্যা করারও সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ঠিক সেই সময় ফেসবুকে পরিচয় হয় মামুনের সঙ্গে। মামুন তার খারাপ সময়ে পাশে থেকে উৎসাহ দিয়েছেন এবং নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখান।
মামুন তাকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসেন। আর সেই ভালোবাসা থেকেই দুজনের সিদ্ধান্তে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তবে এ বিয়ে মামুনের পরিবার মেনে নিলেও খায়রুনের পরিবার মেনে নেয়নি। তিনি আজীবন মামুনের সঙ্গে সংসার করে যেতে চান।
মামুন তখন বলেছিলেন, মন্তব্য কখনো গন্তব্য ঠেকাতে পারে না। কে কী বলল, সেগুলো মাথায় না নিয়ে নিজেদের মতো সংসার গুছিয়ে নিয়ে জীবন শুরু করেছি।