মেন্টাল হেলথ ডেস্ক
উদ্বেগ যখন সমস্যার প্রথম পর্বে আমরা জেনেছি, উদ্বেগ বা অ্যাংজাইটি কী এবং কেন হয়, সে সম্পর্কে। এখন আমরা জানবো, অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার হলে আপনি কী করবেন, কখন বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন এবং বতর্মানে কী ধরনের সেবা বাংলাদেশে আছে, সে সম্পর্কে।
অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার একটি দীর্ঘমেয়াদী সমস্যা, যা বিভিন্ন বিষয়ে অতিরিক্ত চিন্তার উদ্রেক ঘটায়। এক্ষেত্রে বিভিন্ন ঘটনা, দুর্ঘটনায় সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন।
অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারের কিছু দীর্ঘমেয়াদি উপসর্গ রয়েছে। বিগত ছয় মাসে কাউকে যদি খুব বেশি নার্ভাস বা চিন্তিত থাকতে দেখা যায়; কোন ঘটনা ঘটলে যদি তিনি অনেক বেশি চিন্তায় পড়েন, যা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না, এমনটি হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
উদ্বেগজনিত সমস্যার লক্ষণ
অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডারে ছয়টি প্রধান লক্ষণ রয়েছে। যার মধ্যে যে কোন তিনটি বা তার বেশি দেখা দিলেই তা এই সমস্যার নিশ্চয়তা দেবে। যেমন-
- অস্থির অনুভব করা অর্থাৎ স্থিরভাবে কোথাও বসতে না পারা,
- সহজেই ক্লান্ত হওয়া,
- কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে সমস্যা হওয়া বা মন হারিয়ে যাওয়া,
- খিটখিটে মেজাজ, মাংসপেশী প্রায় শক্ত হয়ে যাওয়া,
- প্রায়ই ঘুমিয়ে পড়তে বা ঘুমিয়ে থাকতে সমস্যা হওয়া বা ঘুমিয়ে তৃপ্তি না পাওয়া;
- এমন দুশ্চিন্তা করা যে, খারাপ জিনিস ঘটতে পারে।
এমন সব ভাবনা বা লক্ষণের কারণে যদি ব্যক্তির সামাজিক, পেশাগত বা অন্যান্য কাজে উল্লেখযোগ্য সমস্যা বা ব্যাহত হয়, তখন তাকে দ্রুত বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণের উপায়
অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার আমরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি, এবার আসি সেই প্রসঙ্গে। তা হলো-
- নিয়মিত কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করা
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
- পরিমিত ঘুম
- প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো
- বিশ্রামের সাথে সাথে দু’একটি শখের অভ্যাস রাখা
- বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করা
- ইতিবাচক চিন্তা করা
- নতুন নতুন দক্ষতা তৈরি করা
- শ্বাসের ব্যায়ামের মাধ্যমে শিথিল হওয়া, পেশীর শিথিলায়ন করা
- সাঁতার কাটা, খেলাধূলা করা, সাইকেল চালানো, বেড়াতে যাওয়া
- নেতিবাচক বিষয়গুলো বাদ দেওয়া, যেমন- অতিরিক্ত ধূমপান, মদ্যপান, দুশ্চিন্তা না করা
বাংলাদেশে চিকিৎসাসমূহ
মেন্টাল হেলথ সার্ভে ইন বাংলাদেশ ২০১৮-১৯ অনুযায়ী, এদেশে মানসিক সমস্যাগ্রস্ত ৪ দশমিক ৫ ভাগ মানুষ উদ্বেগজনিত সমস্যায় ভুগছে। নারীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা গেছে। আবার শহরের চেয়ে গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের সমস্যাগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা বেশি।
আমাদের দেশে উদ্বেগজনিত সমস্যার চিকিৎসা হিসেবে ঔষধ, সাইকোথেরাপি, কগনিটিভ বিহেভিয়ার থেরাপি, মাইন্ডফুলনেস ইত্যাদির ব্যবস্থা রয়েছে।
যেখানে পরামর্শ বা চিকিৎসা পাবেন
রাজধানীর জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাসিরুল্লাহ সাইকোথেরাপি ইউনিট এবং দেশের যে কোন সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে পরামর্শ বা চিকিৎসা দেয়া হয়।
আমাদের সাথে যোগাযোগ
এছাড়াও আপনি যদি দ্রুত পরামর্শ পেতে চান বা আপনার নিজ এলাকার মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সম্পর্কে জানতে চান, তবে আমাদের কাছে লিখতে পারেন।
আমাদের ইমেইল: psychohealthbd@gmail.com।