মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে তরুণরা, শিক্ষানীতিতে অন্তর্ভুক্তির দাবি দেশে প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে মানসিক সমস্যা রোগী, যাদের মধ্যে আশঙ্কাজনক ঝুঁকিতে রয়েছে তরুণ সমাজ। বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে মানসিক রোগে আক্রান্তদের মধ্যে অধিকাংশেরই বয়স ৫০ বছরের নিচে।
শারীরিক অনেক জটিলতার কারণ মানসিক স্বাস্থ্যহীনতা। তাই এটিকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষানীতিতে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন মানসিক চিকিৎসক বিশেষজ্ঞরা।
মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের মধুমতি হলে ১১তম আন্তর্জাতিক মনোরোগ চিকিৎসক ও ১৩তম সার্ক মনোরোগ আন্তর্জাতিক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বিশেষজ্ঞরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. আফজাল জাভেদ বলেন, চিকিৎসা ব্যবস্থার বড় একটি অংশ মানসিক স্বাস্থ্য। এ স্বাস্থ্যসেবায় বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। অটিজমের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যে বাংলাদেশ, ভুটানসহ চারটি দেশ একসঙ্গে কাজ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ বিশ্বে তরুণদের বড় একটি অংশ মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। যাদের ৭৫ ভাগের বয়স ৫০ বছরের নিচে। ধর্মীয় রীতিনীতি ও পারিবারিক সদাচারণ এ ক্ষেত্রে অনেকটাই কমিয়ে আনে। একই সঙ্গে সিভিল সোসাইটিকে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষানীতি যুক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সম্মেলনে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ৬৮০ জন মনোবিদ অংশ নেবেন। একইসঙ্গে ৬৮ জন বক্তা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন। ওয়ার্ল্ড সাইকিয়াট্রিক প্রধান, ভারতের সংস্থার প্রধানসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা কথা বলবেন।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব সাইকিয়াট্রিকের সহসভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজুর রহমান বলেন, দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসকদের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলন। বৈজ্ঞানিক এ সম্মেলনে গবেষণা তুলে ধরা হবে।
বাংলাদেশ সাইক্রিয়াটিস্টিক সোসাইটির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সরকার এখন এই রোগে গুরুত্ব দিচ্ছে। মানুষের দোরগোড়ায় মানসিক স্বাস্থ্যসেবা যাতে আমরা পৌঁছে দিতে পারি সেই চেষ্টা করছি।
জাতীয় মানসিক ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০২২ সালে মানসিক স্বাস্থ্যনীতি যুগোপযোগী করা হয়েছে। ২০১৮ সালে মানসিক স্বাস্থ্যের আইন ও কৌশল হয়েছে। কাগজে কলমে অনেক কিছু হয়েছে, এখন কাজ করার সময়।
বর্তমানে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য হাসপাতালে প্রতিদিন ৪০০-৬০০ জন রোগী আসে, অথচ সেই পরিমাণে জনবল নেই। ছয়জন অধ্যাপকের জায়গায় আছে মাত্র একজন। তবে দেশে ৬০৩টি সরকারি-বেসরকারি কেন্দ্রে কিশোর বান্ধব বুথ রয়েছে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখন সেবা রয়েছে। যেখানে জীবনযাপন প্রণালী রয়েছে। গত দুই বছরে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সবচেয়ে বেশি গবেষণা হয়েছে বলেও জানান এই চিকিৎসক।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট