আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী ছিল- আদালতের প্রশ্ন

হাইকোর্ট

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে সেপ্টেম্বরের শুরুতে। এর ৩২ দিন পর পাশবিক নির্যাতনের ভিডিও ভাইরাল হয়। এই এক মাসেরও বেশি সময়ে সেখানকার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন হাইকোর্ট।

‘৩২ দিন পর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে- এর আগে পুলিশ কী করেছে?’ এমন প্রশ্ন আদালতের। কোনো মানবাধিকার সংগঠন আদালতের শরণাপন্ন না হওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন উচ্চ আদালত।

সোমবার (৫ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ (ভার্চুয়াল) এ সব মন্তব্য করেন। এরপর রুল জারিসহ ও পাঁচ দফা নির্দেশনা দেন আদালত।

বেঞ্চে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিনউদ্দিন, সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অ্যাড. ইয়াদিয়া জামান, জামিউল হক ফয়সাল, রাশিদা চৌধুরী নিলু, তানজীম আল ইসলামসহ অনেকে। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।

আদালতের বক্তব্য, ‌‌‌‌‌‌‌’এই ভিডিও যদি ভাইরাল না হতো তাহলে তো পুলিশ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতো না।’
‘আমরা আশাহত হয়েছি যে, অধিকার, আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্লাস্টের মতো সংগঠন বা কোনো নারী সংগঠন এগিয়ে আসেনি।’

এর আগে সকালে ওই ঘটনা নিয়ে সোমবারের (৫ অক্টোবর) বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। নজরে আনার পর তাদের একটি লিখিত আবেদন জমা দিতে বলেন আদালত। বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে শুনানির সময় নির্ধারণ করেন।

দুপুরে বিরতির পর আদালতের নির্ধারিত সময়ে শুনানি শুরু হয়। এতে অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অপসারণের আবেদন জানান।

ভার্চুয়ালে সংযুক্ত হয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনায় সমাজে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত করছে। বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।’

এর আগে, নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের একটি গ্রামে এক নারীকে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক একজন নারীকে বিবস্ত্র করে মারধর করছে। তাদের একজন পা দিয়ে ওই নারীর মুখ চেপে ধরেছে। বারবার আকুতি জানানোর পরও তার ওপর নির্যাতন থামেনি।

এ ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। এতে এ পর্যন্ত চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় ওই নারীর পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে সংশ্লিষ্ট পুলিশকে নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।