আগুনে পোড়া অন্তঃসত্ত্বা মায়ের বাঁচার আকুতি

ছবি : কালবেলা

কালবেলা

‘পেটের বাচ্চার জন্য বাঁচতে ইচ্ছে হয়, আমি না বাঁচলে সেও মরে যাবে’, পোড়ার যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে অস্ফুট এই অভিব্যক্তি অগ্নিদগ্ধ অন্তঃসত্ত্বা মা কল্পনা আক্তারের।

ৎকোন বার্ন ইউনিটে না, টিনের দোচালা ঘরেই চিকিৎসা চলছে হতভাগ্য এই নারীর। তীব্র শীতের মধ্যে ঘা শুকাতে কতদিন লাগবে, তা বলতে পারছে না কল্পনার পরিবার।

কৃষি শ্রমিক স্বামী রুবেল মিয়া কালবেলাকে জানান, ‘আমার স্ত্রীর জন্য আপনারা দোওয়া করবেন’।

বছর দেড়েক আগে কল্পনার সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় তার। পাঁচ মাস আগে কল্পনার গর্ভে সন্তান আসে।

শৈত্য প্রবাহের মধ্যে শীত নিবারণের জন্য গত বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) আগুন পোহাতে গিয়ে অসাবধানতাবশত আগুন লাগে কল্পনার পরনের কাপড়ে।

আগুন নেভানোর আগেই পুড়ে যায় হাঁটুর নিচ থেকে গলা পর্যন্ত।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামে মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটে।

কল্পনার বাবা একই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ফুলগাছ গ্রামের দরিদ্র কৃষক আব্দুল করিম। ঘটনার এক সপ্তাহ পর কালবেলার পক্ষ থেকে কল্পনা আক্তারের খোঁজ নেয়া হয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, অবস্থার আরো অবনতি হয়েছে কল্পনার। টাকার অভাবে সুচিকিৎসা নিতে না পারায় মৃত্যুর প্রহর গুনছেন এই গৃহবধু।

নিজের জন্য না, গর্ভের সন্তানকে বাঁচাতে সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা চায় কল্পনা পরিবার।

স্বামী রুবেল কল্পনাকে শুরুতেই নিয়ে যান লালমনিরহাট জেলা সদর হাসপাতালে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে রংপুরে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে চিকিৎসকরা জানান, কল্পনার শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে।

লম্বা সময় ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা না করলে গর্ভের সন্তানসহ মাকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করার পরামর্শ দেন।

তবে কল্পনার স্বামী রুবেল জানান, টাকার অভাবে কল্পনাকে হাসপাতাল থেকে তার বাবার বাড়ি ফুলগাছে নেওয়া হয়। সেখানে বিছানায় শুয়ে পোড়া ক্ষতের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে তার স্ত্রী।

স্থানীয় মোগলহাট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, কল্পনা নিজেও বাঁচতে চায়। গর্ভের সন্তানকেও বাঁচাতে চায়। কিন্তু পরিবারের পক্ষে ব্যয়বহুল চিকিৎসা চালানো সম্ভব না। চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান মানুষজন সহায়তা করলে মা ও গর্ভের সন্তান দু’জনকেই বাঁচানোর চেষ্টা করা যেতো।

আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে কল্পনার পাশে দাঁড়াতে পারেন যে কেউ। রোগীর আপন বড় ভাইয়ের স্ত্রীর বিকাশ নম্বর ০১৭৯১৪০৭৬৬৪। কল্পনার স্বামী রুবেল ইসলামের মোবাইল (০১৭২৮১২৭০৮১) থাকলেও বিকাশ অ্যাকাউন্ট নেই।

সূত্র: ১৯ জানুয়ারি ২০২৪, কালবেলা অনলাইন