স্তন ক্যানসারের আগেই নিয়মিত স্ক্রিনিংয়ের পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের

স্তন ক্যানসার, স্তর ক্যানসার সচেতনতা দিবস,

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

স্তন ক্যানসার সুরক্ষায় ২০ বছর বয়স থেকে প্রতিমাসে একবার স্তন স্ক্রিনিংয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তারা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে স্তন ক্যানসার নিরাময় শতভাগ সম্ভব।

সোমবার (১০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘স্তন ক্যানসার সচেতনতা দিবস উদযাপনের ১০ বছর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তারা একথা বলেন। ক্যানসারবিরোধী ও নারী সংগঠনসহ ৩৫টি সংগঠনের মোর্চা ‘বাংলাদেশ স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরাম’ এর আয়োজন করে।

সভায় স্তন ক্যানসার সচেতনতা ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান সমন্বয়কারী ডা. হাবিবুল্লাহ রাসকিন বলেন, ‘নিঃসন্তান নারী ও ৩০ বছরের পরে সন্তান নেওয়া নারীদের স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি। এছাড়া চর্বি ও প্রাণিজ খাবার বেশি খাওয়া ও অতিরিক্ত ওজনও স্তন এই মরণব্যধির কারণ।’

তিনি বলেন, ‘দেশের ৮০ ভাগ নারী স্তন ক্যানসার সম্পর্কে জানেন না। আর যে ২০ ভাগ জানেন, তারাও নিয়মিত চেকআপ করান না। স্ক্রিনিং না করার কারণে অনেক নারীর যথাসময়ে এ রোগ শনাক্ত হয় না। ফলে মৃত্যু অবধারিত হয়ে পড়ে।’

গবেষক ড. হালিদা হানুম আখতার বলেন, ‘‘নারীরা সবসময় ‘গোলাপি’ নয়। বিবিএস তথ্যানুযায়ী, ৭২ শতাংশ নারী নির্যাতিত বিভিন্নভাবে। আর এই নারী যখন অসুস্থ হয়ে যায়, তখন কী অবস্থা হয় তা বলার মতো নয়।’’

তিনি বলেন, ‘প্রতি ৫ হাজারে ১ জন নারী ব্রেস্ট ক্যানসারে ভোগেন। ৬০ শতাংশ নারী জরায়ু ক্যানসার সম্পর্কে জানেন, আর ২৪ শতাংশ স্তন ক্যানসার সম্পর্কে জানেন। এছাড়া ডায়াগোনসিস ও স্ক্রিনিং সম্পর্কে খুব অল্প নারীই জানেন।’

স্তন ক্যানসারে নারীদের সচেতনতার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদেরকেও এ বিষয়ে সচেতন হবার পরামর্শ দেন ড. হালিদা হানুম আখতার।

ক্যানসার চিকিৎসায় হাসপাতালের সংকট ক্যানসার মোকাবিলায় বড় প্রতিবন্ধকতা বলে মনে করেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর দেড়লাখ মানুষ প্রায় তিন ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়। সারা দেশে ১৭ কোটি লোক, এর মধ্যে দেড় লাখ মানুষ যদি এত অল্প সংখ্যক ক্যানসার হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়, তাহলে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনায় অনেক ঝামেলা হয়। সরকারের এ বিষয়ে আরও নজর বাড়াতে হবে।’

বিএসএমএমইউ উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ছয়েফ উদ্দিন বলেন, ‘যারা ক্যানসারে আক্রান্ত হন, তাদেরকে যেন গণমাধ্যমে প্রথমেই প্রকাশ না করা হয়। কিছু বিষয় যেন গোপন থাকে। সচেতনতার পাশাপাশি আমরা যেন প্রচার করে কারও ক্ষতি না করে ফেলি।’

সভায় স্তন ক্যানসার সচেতনতায় অবদানের জন্য ১০ জন সাংবাদিককে কৃতজ্ঞতা স্মারক দেওয়া হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, অধ্যাপক মোজাহেরুল হক, অধ্যাপক সৈয়দ আব্দুল হামিদসহ মোর্চার অন্তর্ভুক্ত প্রতিনিধিরা।