কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার অনলাইন প্রশিক্ষণ শুরু

মানসিক চাপ মোকাবেলা

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

১৭ই জানুয়ারি শুরু হলো কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক তিনদিনব্যাপী অনলাইন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।

জিআইজেড বাংলাদেশ ও কারা অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে রুল-অফ-ল প্রোগ্রামের অধীনে এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন। অর্থায়ন করছে বৃটিশ ও জার্মান সরকার।

উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোঃ খাইরুল আলম শেখ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোমিনুর রহমান মামুন এবং জিআইজেডের রুল অফ ল প্রোগ্রামের প্রধান প্রমিতা সেনগুপ্ত।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য ও প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য নিয়ে বক্তব্য প্রদান করেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদ।

কারাগারে কর্মরত কারা-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে মানসিক চাপ আরো বেশী। কারা-কর্মীগণ সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে করোনা মোকাবেলায় ভূমিকা রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় করোনা মহামারীর শুরুতেই নানান কর্মসূচি গ্রহণ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সময়োপযোগী ও কারা অধিদপ্তরের দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশের কারাগারসমূহ বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় শক্ত অবস্থানে রয়েছে।

মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক এই প্রশিক্ষণ দেশের সব কারাগারে প্রদান করার ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সব সময় সচেষ্ট থাকবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কামাল উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোঃ খাইরুল আলম শেখ বলেন, করোনাভাইরাসের বিস্তার পৃথিবীকে এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভীতি থেকে অবসাদে ভোগা, মনের উপর বাড়তি চাপ পড়া, হতবিহ্বল হয়ে পড়া, আতঙ্কিত হওয়া বা রেগে যাওয়া স্বাভাবিক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোঃ মোমিনুর রহমান মামুন জানান, গত পাঁচ বছরে ৩০০ কারাবন্দীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

তাঁদের মধ্যে ১৪৩ জন সিজোফ্রেনিয়ায় ভুগছিলেন। ফরেনসিক সাইকিয়াট্রি বিভাগের একটি গবেষণা থেকে এটি জানা যায়।

সিজোফ্রেনিয়ার মতো রোগটি ছাড়াও ৯৬ জন বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার ও ১৭ জন সাইকোটিক ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন।

এর বাইরে ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার, অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার, মেন্টাল রিটারডেশন, সাবস্টেন্স রিলেটেড ডিসঅর্ডার ও পারসোনালিটি ডিসঅর্ডারে ভুগছিলেন অন্যরা।

কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলায় কারা অধিদপ্তর দেশের ৬৮টি কারাগারে করোনা মোকাবেলায় সময়ে বিভিন্ন নির্দেশনা প্রদান করেছে এবং এগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করার জন্য অধিদপ্তর প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছে।

এরই ধারাবাহিকতায় গত বছর কারাভ্যন্তরে কোভিড-১৯ প্রতিরোধে করণীয় ও মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছিল।

ওই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের সুপারিশক্রমে এই মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়।

এটি শুধু ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগারেই নয়, বরং দেশের সকল কারাগারে কিভাবে প্রদান করা যায়, তার উদ্যোগ নেয়া হবে।

প্রশিক্ষণটিতে বিশেষজ্ঞ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিষ্টগণ মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিভিন্ন সেশন পরিচালনা করবেন ।

স্বাস্থ্য সেক্টর, ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তত্ত্বাবধানে তিনটি ব্যাচের মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে দেশের ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগারের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রশিক্ষণটি দেওয়া হবে।

সুত্র: দৈনিক সময় সংবাদ ২৪ ডট কম