বিশ্ব ক্যান্সার দিবস পালিত

বিশ্ব ক্যান্সার দিবস

সাইকোহেলথ নিউজ ডেস্ক

আজ ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, পালিত হলো বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। এবার এ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘ক্যান্সারের বিরুদ্ধে আমি আছি, আমি থাকবো।’ দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। বছরে দেশে এক লাখ ৫০ হাজার লোক এই রোগে আক্রান্ত হয়।

মারা যায় এক লাখ ৮ হাজার। বাংলাদেশে ১৬ থেকে ১৭ লাখ ক্যান্সার রোগী রয়েছেন বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যান্সারের (আইএআরসি) প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে নারী ক্যান্সার রোগীদের মধ্যে স্তন ক্যান্সারের পরই জরায়ু মুখের ক্যান্সারের অবস্থান।

প্রতি বছর এই রোগে ৮ হাজার ৬৮ জন নারী নতুন করে আক্রান্ত হন, যা নারী ক্যান্সার রোগীর প্রায় ১২ শতাংশ। এর মাঝে মারা যান ৫ হাজার ২১৪ জন। আক্রান্ত তুলনায় মৃত্যুর হার ৬৪ ভাগ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিমাত্রায় তামাকজাত দ্রব্য সেবনের কারণে আক্রান্ত হচ্ছে ফুসফুস ক্যান্সারে। আবার অনিরাপদ খাদ্য গ্রহণকেও চিকিৎসকরা ক্যান্সারের একটি অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন।

কৃষিতে রাসায়নিক ও কীটনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার আমাদের খাদ্যদ্রব্যকে করে তুলছে অনিরাপদ। এর উপর রয়েছে ফলমূল ও মাছে ফরমালিনের ব্যবহার। বায়ুদূষণকেও ক্যান্সার বিস্তারের আরো একটি কারণ বলে মনে করেন তারা।

বাতাসে সিসার পরিমাণ বৃদ্ধি ক্যান্সারের ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। গবেষণা বলছে, ক্যান্সার আক্রান্ত প্রতি ২ লাখ মানুষের জন্য দুটি রেডিও থেরাপি সেন্টার প্রয়োজন।

কিন্তু অনুসন্ধানে জানা যায়, দেশে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি রেডিও থেরাপি সেন্টার আছে ১৫টি। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এর মধ্যে সরকারি আছে ৯টি ও বেসরকারি ৬টি। যার সবগুলোর মেশিন আবার সমভাবে সচল নয়।

জানা গেছে, মোট ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মধ্যে ৬০ শতাংশই পুরুষ। পুরুষের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ১৩ শতাংশ আক্রান্ত হচ্ছে ফুসফুস ক্যান্সারে, লিপ অ্যান্ড ওরাল ক্যান্সারে ১২ শতাংশ, অন্ন নালির ক্যান্সারে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এ ছাড়া আছে পাকস্থলী, হস্কিন লিম্ফোমা, মূত্রনালি, লিভার ও লিউকোমিয়া ক্যান্সার।

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের ক্যান্সার ইপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন তার এক প্রবন্ধে বলেন, বর্তমানে পৃথিবীতে প্রতি বছর ৮২ লাখ মানুষ ক্যান্সারে মৃত্যুবরণ করে। এর মধ্যে ৪০ লাখ ঘটে অকালমৃত্যু, ৩০ থেকে ৬৯ বছরের মধ্যে।

ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে কিছু কাজ সম্মিলিতভাবে সফল করতে পারি। আবার ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকেই পারি ক্যান্সারের বোঝা লাঘবে ভূমিকা রাখতে। ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজের ওপর ক্যান্সারের ক্ষতিকর প্রভাব লাঘবে সবারই সুযোগ আছে ব্যবস্থা নেয়ার।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের চারটি উপাদান-(১) প্রাথমিক প্রতিরোধ, (২) প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয়, (৩) নির্ণয় ও চিকিৎসা এবং (৪) প্রশমন সেবা বা পেলিয়েটিভ কেয়ার।